Advertisement
E-Paper

ইমার্জেন্সি আলোয় প্রসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে!

স্থানীয় সূত্রের খবর, এগরা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে এগরা-২ ব্লকে রয়েছে পানিপারুল প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ১০ শয্যা বিশিষ্ট ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন।

গোপাল পাত্র

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০০:২৩

দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের ভরসা এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্ত সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো এবং পরিষেবা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আপৎকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নেই কোনও জেনারেটরের ব্যবস্থা। রাতে লোডশেডিংয়ের সময় ব্যাটারিচালিত আলো (ইমার্জেন্সি লাইট) দিয়েই চলে সন্তান প্রসবের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এগরা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে এগরা-২ ব্লকে রয়েছে পানিপারুল প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ১০ শয্যা বিশিষ্ট ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের বেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও রাতে লোডশেডিং হলেই গোটা কেন্দ্র ঢুবে যায় অন্ধকারে তখন ভরসা কেবল এমারজেন্সি লাইট।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রসূতি বিভাগ এবং পুরুষ বিভাগে লোডশেডিংয়ের সময় তৈরি থাকে তিনটে ইমারজেন্সি লাইট। ওই মুহূর্তে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও আসন্ন প্রসবা মহিলা এলে বেরিয়ে পড়ে পরিকাঠামোর কঙ্কালসার রূপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, ‘‘ওই সময় লেবার রুমে রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ডেলিভারি টেবিলে কাছে থাকা হুকে ব্যাটারি লাইটগুলি ঝুলিয়ে আলোর ব্যাবস্থা করা হয়। আর ওই আলো অন্ধকারেই ঝুঁকি নিয়েই চলে সন্তান প্রসবের কাজ।’’ ওই কর্মীর কথায়, ‘‘এতেও আলোর সমস্যা হলে নার্সরা হাতে ব্যাটারি লাইট নিয়ে চিকিৎসকদের দেখান। এ ভাবেই মাসের পর মাস এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলে সন্তান প্রসবের কাজ।’’

আরও পড়ুন: বাড়িতে চড়াও হয়ে ‘হুমকি’, হৃদ্‌রোগে মৃত্যু হল মহিলার

পানিপারুল গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিপারুল, খুরুটিয়া, জুমকি, বহলিয়া, চাটলা, শ্রীপুর, বোলকুশদা-সহ অন্য গ্রামের বহু মানুষ ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভর করেন। খুরুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা তথা এক রোগীর আত্মীয় মুক্তিপদ বেরা বলেন, ‘‘মাস তিনেক আগে আমার এক সন্তানসম্ভবা আত্মীয়া ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাতে সন্তান প্রসব করেছিলেন। ওই সময় লোডশেডিং চলছিল। ইমারজেন্সি জ্বালিয়ে সন্তান প্রসব করানো হয়।’’ ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘এ ভাবে ঝুঁকি নিয়ে সন্তান প্রসব করানোর সময় যদি কিছু অঘটন ঘটে, সেই দায় কে নেবে! অবিলম্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আপাৎকালীন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা দরকার।’’

শুধু বিদ্যুতের সমস্যা নয়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে নার্সেরও অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অভিযোগ, স্থায়ী সাফাইকর্মী এবং কাপড় কাচার লোকও নেই কেন্দ্রে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পরিষ্কারের ঝক্কি এড়াতে রোগীদের বিছানা চাদর পর্যন্ত দেওয়া হয় না। বিছানা নোংরা, গদির কোথাও ছিঁড়ে গিয়েছে আবার কোনও শয্যায় সেই গদিটুকুও নেই বলে অভিযোগ। দাবি, রোগীদেরই বাড়ি থেকে কাঁথা এবং বিছানার চাদর নিয়ে আসতে হয়।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যে আলোর সমস্যা রয়েছে তা কার্যত মেনে নিয়েছেন এগরা-২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বারিক। তিনি বলেন, ‘‘লেবার রুমে পানিপারুল স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যে ইমারজেন্সি আলোর ব্যবস্থা রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। তার মধ্যেও আমরা কয়েকটা বাড়তি চার্জার আলো ব্যবস্থা করে রেখেছি। তাতেই লোডশেডিংয়ের মোকাবিলা করা হয়। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে কয়েক মাস আগে ইনভার্টারের জন্য আবেদন কার হয়েছে।’’

হাসপাতালে আলোর সমস্যা প্রসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘লেবার রুমে ছোট ইনভার্টারে ব্যবস্থা জেলা তরফে করা যায়। এ ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আর বিছানার চাদর না দেওয়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Birth Emergency Light Health Care Centre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy