Advertisement
০৫ মে ২০২৪
কড়াকড়ি ও বিকল্প আয়ের আশ্বাসেই সাফল্য। গ্রাম ঘুরল আনন্দবাজার। 
Hooch Trader

Hooch: বিকল্প রুজি কদ্দিনে, সংশয়ে কারবারিরা

কড়াকড়ি ও বিকল্প আয়ের আশ্বাসেই সাফল্য। গ্রাম ঘুরল আনন্দবাজার। 

চোলাই তৈরি বন্ধের পরে অনেকেই মাছ ধরছেন। হরিশপুরে।

চোলাই তৈরি বন্ধের পরে অনেকেই মাছ ধরছেন। হরিশপুরে। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২০
Share: Save:

চোলাই তৈরিতে লাগে একশো টাকা। বিক্রি হয় চারশো টাকায়। হাতে হাতে লাভ তিনশো টাকা। আর উৎপাদন? যত খুশি!

কাঁচা টাকার টানেই জমজমাট ছিল চোলাই ব্যাবসা। প্রশাসন রাশ টেনেছে তাতে। কিন্তু কতদিন রোখা যাবে কারবার, বিকল্প রোজগার ঠিক কী হবে— সে সব প্রশ্ন আসছে। মদ, মহুল বিক্রি বাড়াতেই চোলাইয়ে কড়াকড়ি হল কিনা, তেমন চর্চাও চলছে।

অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এর আগেও নানা সময়ে চোলাই কারবার বন্ধ করতে বিকল্প আয়ের কথা ভেবেছিল প্রশাসন। হাতের কাজের প্রশিক্ষণ, একশো দিনের কাজ কিংবা আনাজ, মাছের ব্যবসায় যুক্ত করে কারবার ছাড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনার বিভিন্ন গ্রামে। তবে সব ক্ষেত্রে ফলপ্রসু হয়নি। তবে এক সময় ঘাটালের মনোহরপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায় চোলাই অভিযানে সাফল্য এসেছিল। সেখানে এই কারবার কেউ মাছ বেচছেন, কেউ আবার চপ মুড়ির দোকান খুলে বসেছেন।

প্রশাসন জানাচ্ছে, চোলাই কারবারে মহিলা ও পুরুষ উভয়ই রয়েছে। সকলের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়াই এখন লক্ষ্য। সে জন্য পঞ্চায়েতগুলি এগিয়ে এসেছে। পঞ্চায়েতে শিবির করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সে কথা জানিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কী ভাবনা রয়েছে? জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ঋণ দেওয়া যেতে পারে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মতো প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হতে পারে। পুরুষদের নিয়ে আলাদা স্বনির্ভর গোষ্ঠী খুলে তাঁদের স্বাবলম্বী করার ভাবনাও রয়েছে। তা ছাড়া মাছ চাষ, ছোটখাটো ব্যবসা, ফুল চাষ, আনাজের ব্যবসায় যুক্ত করা যেতে পারে। বয়স অনুযায়ী পেনশনের ব্যবস্থা, লক্ষ্মী ভান্ডারে মেয়েদের নাম নথিভুক্ত করেও সুরাহা করা হবে।

তাতেও যেন ভরসা পাচ্ছেন না ঘাটালের হরিশপুরের বাসন্তী দোলই, মল্লিকা ধাড়া, মনসুকার কাকলি সাঁতরারা। তাঁদের ক্ষোভ, “দু’মাস হল চোলাই তৈরি করিনি। কিন্তু পঞ্চায়েত থেকে কেউ আসেনি। কবে কী হবে তাও জানি না। বিকল্প আয়ের পথ তৈরি না হলে আমাদের চলবে কী করে।” ঘাটালের মনোহরপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকার যুবক শৌভিক দোলইও বলছিলেন, “বিকল্প আয়ের মাধ্যমটা কী, তা আমাদের এসে বলতে হবে।” ঘাটালের গোপমহলের করুণা সিংহের কথায়, “আমাদের গ্রামে আগে সবাই চোলাই কাটাতাম। এখন ওই পেশা ছেড়ে মাছ বিক্রি করছে অনেকে। প্রশাসন সবাইকে কোনও না কোনও কাজে যুক্ত করতে না পারলে চোলাই পুরোপুরি বন্ধ হবে না।” মনোহরপুর-১ এবং মনসুকা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ মান্না এবং রাত্রি সিংহ পণ্ডিত দু’জনই অবশ্য বলছে, “সকলের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাসেরও বক্তব্য, “সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hooch Trader Hooch ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE