Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Vandalism

রোগীর মৃত্যু, রেল হাসপাতালে ভাঙচুর

মৃতের পারিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্কর দীর্ঘদিন ধরে ব্রেন টিবিতে ভুগছিলেন।

রেল হাসপাতালে চলছে বিক্ষোভ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

রেল হাসপাতালে চলছে বিক্ষোভ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০২
Share: Save:

রোগী মৃত্যু ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল খড়্গপুরে রেল ডিভিশনের প্রধান হাসপাতালে। শনিবার শহরের সাউথসাইডে রেলের ওই হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালে ভাঙচুর চালান মৃতের পরিজনেরা।

মৃত যুবকের নাম এস শঙ্কর রাও (২৮)। তাঁর বাড়ি শহরের ওল্ড সেটলমেন্ট ১ নম্বর রেলকলোনিতে। প্রবল শ্বাসকষ্টে গুরুতর অসুস্থ ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে চিকিৎসা শুরু হতেই মৃত্যু হয়। তার পরেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। ভাঙচুরের খবর পেয়ে আসে আরপিএফ। আসেন খড়্গপুরের ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান। রেলের দাবি, চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। পরে মৃতের বাবা রেল কারখানার কর্মী হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি সামলান।

মৃতের পারিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্কর দীর্ঘদিন ধরে ব্রেন টিবিতে ভুগছিলেন। ছিল স্নায়ুর নানা সমস্যা। শুক্রবার রাতে বমি করেন তিনি। এ দিন সকাল আটটা নাগাদ শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বারবার সংজ্ঞা হারান শঙ্কর। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় দ্রুত তাঁকে রেলের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে তখন ছিলেন এক মহিলা চিকিৎসক। তিনিই শঙ্করের চিকিৎসা শুরু করেন। অভিযোগ, রোগীকে আইটিইউতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার সময় পরিজনেদের হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। ঘন্টা খানেক পরেই পরিজনেদের জানানো হয়, ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। উত্তেজিত পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

মৃতের ভাই এস চান্টি রাও বলেন, “দাদাকে যখন হাসপাতালে এনেছিলাম তখনও কথা বলছিল। কিন্তু এখানে কোনও সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না। আমরা বারবার বলা সত্ত্বেও কেউ আসেনি। সঠিক চিকিৎসা পেলে আমার দাদা বেঁচে যেত। চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই ওর মৃত্যু হয়েছে।” একই দাবি করে মৃতের মা এস শ্যামা বলেন, “মহিলা চিকিৎসক সঠিক চিকিৎসা করেননি।” এ দিন বিক্ষোভের সময় আইটিইউ-এর সামনে দরজার কাচ ভেঙে দেয় মৃত যুবকের পরিজনেরা। তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় রেল হাসপাতালে।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তখন শঙ্করের সংজ্ঞা ছিল না। অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৪০। ব্রেন টিবির মতো জটিল অসুখ থাকায় অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক ও সহায়কেরা প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। খবর দেওয়া হয় সিনিয়র চিকিৎসকদেরও। অবশ্য তার আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

খড়্গপুর রেল হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট এসএ নাজমি বলেন, “ব্রেন টিবিতে আক্রান্ত থাকায় রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়েছিল। অক্সিজেনের মাত্রা অস্বাভাবিক কম ছিল। তার পরেও আমাদের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসায় কোথাও গাফিলতি নেই।”

এ দিন হাসপাতালে এসে রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে কথা বলেন ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান। পরে তিনিও বলেন, “চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vandalism Hospital Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE