Advertisement
১১ মে ২০২৪
digha

Digha: হোটেল খালির নির্দেশে হতাশ মালিকরা, নীল আকাশের দিঘা ছাড়তে নারাজ পর্যটকরাও

পুজোর মুখে পর্যটকদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে ব্যবসায়ী মহলের অন্দরে।

সোমবারের দিঘা।

সোমবারের দিঘা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:০২
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় গুলাব রবিবার সন্ধ্যায় আছড়ে পড়েছে ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল অঞ্চলে। সতর্কতা হিসাবে দিঘার হোটেলগুলি পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু যতটা ভাবা হয়েছিল গুলাবের ততটা প্রভাব পড়েনি এ রাজ্যের উপকূলে। রবিবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও সোমবার সকাল থেকে পরিষ্কারই রয়েছে দিঘার আকাশ। তবে মঙ্গলবার থেকে নিম্নচাপ আছড়ে পড়তে পারে বাংলায় এবং তার জেরে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও দিঘা ছেড়ে যেতে পর্যটকদের একাংশ যেমন রাজি নন, তেমনই হোটেল ব্যবসায়ীদের একাংশও প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে হতাশ।

দিঘাকে পর্যটকশূন্য করার জন্য রবিবার দিনভর প্রচার করেছে প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও তা জানা ছিল না অনেকেরই। অনেকে পর্যটকই রবিবার দিঘায় এসে প্রশাসনের নির্দেশিকা জেনে হতাশ হয়েছেন। অনেকে প্রশাসনের নির্দেশিকা শুনেও দিঘা ছাড়তে রাজি হননি। কেউ কেউ আবার প্রশাসনের ঘোষণা শুনেই দিঘা ছেড়ে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। কেউ আবার ভাড়া নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিতর্কেও জড়িয়েছেন। সব মিলিয়ে সোমবারও চরম উৎকণ্ঠায় দিঘায় থেকে যাওয়া পর্যটকরা।

জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীরাও। এক দিকে করোনা অতিমারিতে প্রায় দেড় বছর হোটেল ব্যবসা বন্ধ ছিল। এর মধ্যে পুজোর মুখে আচমকা পর্যটকদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধের নির্দেশ জারি হয়েছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে জেলা প্রশাসন এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষোভ দানা বেঁধেছে ব্যবসায়ী মহলের অন্দরে। যাঁরা ইতিমধ্যেই বুকিং করে এসেছিলেন এবং যাঁরা অগ্রিম বুকিং করেছেন তাঁদের কী হবে তা নিয়েই প্রশ্ন ঘুরছে হোটেল মালিকদের মধ্যে। কিন্তু প্রশাসনের বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে রবিবার রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত নির্দেশও আসেনি বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকরা।

এই নিষেধাজ্ঞা জারির কারণ হিসাবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি বলেছেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই সমুদ্রস্নানে নেমে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্যই পর্যটকদের দিঘা ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তবে নির্দেশে হতাশার সুর ধরা পড়েছে দিঘা-শংকরপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায়ের গলাতেও। বিপ্রদাস বলেছেন, ‘‘করোনা আবহে গত দেড় বছর ধরেই হোটেল ব্যবসা কার্যত বন্ধ। তার উপর সদ্য হোটেল মালিকদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে কর্মীদের এক মাসের বেতন পুজোর বোনাস হিসেবে দেওয়া হবে। দিঘায় যে হারে ভিড় বাড়ছিল এই ঘোষণায় তা এক ধাক্কায় থমকে যাবে। আগাম বুকিং করা পর্যটকদের টাকা ফেরানো নিয়েও সমস্যা হতে পারে। সব মিলিয়ে লোকসানের বোঝা বাড়বে।’’ তবে প্রশাসন নির্দেশ দিলে তা মানতে তাঁরা বাধ্য বলে জানিয়েছেন বিপ্রদাস। তিনি বলেছেন, ‘‘রবিবার মহকুমা প্রশাসনের তরফে হোটেলগুলি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই মর্মে লিখিত নির্দেশ চলে আসবে।’’ বিষয়টি নিয়ে সব হোটেল মালিকদের অবগত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE