Advertisement
০৮ মে ২০২৪

স্কুলে বেআইনি নির্মাণ, সন্ধে হলেই আড্ডা

এলাকার নাম করা সেই স্কুলের মাঠেই একের পর এক গজিয়ে উঠছে দোকানঘর। বেদখল হয়ে যাচ্ছে পড়ুয়াদের খেলার মাঠ। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দিনে-দুপুরে ছাত্রীদের উদ্দেশে ভেসে আসে কটূক্তি। রাতে পুরো স্কুল চত্বরের দখল নেয় অসামাজিকরা।

দখল: মাঠের পাশে সার দিয়ে ঘর তৈরি হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

দখল: মাঠের পাশে সার দিয়ে ঘর তৈরি হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

আরিফ ইকবাল খান
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫৭
Share: Save:

স্কুলের বয়স প্রায় একশো বছর। এলাকার নাম করা সেই স্কুলের মাঠেই একের পর এক গজিয়ে উঠছে দোকানঘর। বেদখল হয়ে যাচ্ছে পড়ুয়াদের খেলার মাঠ। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দিনে-দুপুরে ছাত্রীদের উদ্দেশে ভেসে আসে কটূক্তি। রাতে পুরো স্কুল চত্বরের দখল নেয় অসামাজিকরা।

গত কয়েক বছর ধরেই পুলিশ ও প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি বলে দাবি করেছেন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আসদতলা বিনোদ বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষ। নন্দীগ্রাম থানায়ও অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। যদিও থানার তরফে অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বয়াল অঞ্চলের ওই প্রাচীন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দমোহন দে-র অভিযোগ, স্কুল চত্বরে তৈরি হয়ে গিয়েছে বাড়ি, দোকান ঘর। তার ফলে স্কুলের দরজা ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকছে। বিঘ্নিত হচ্ছে স্কুলের নিরাপত্তা। ইতিমধ্যেই দু’বার চুরি হয়ে গিয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ। সন্ধের পর স্কুলের মাঠে বসে যায় মদের আসর।

স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রথমে এ ঘটনার প্রতিবাদ করলেও মদ্যপ যুবকদের ভয়ে পরে আর কিছু বলার সাহস করেননি তাঁরা। প্রধান শিক্ষক আনন্দমোহন দে-র কথায়, “একবার তৈরি হয়েছে ওইসব দোকান, বাড়ি। এখন আবার শুনছি সে সব বাড়ি হস্তান্তরিত হচ্ছে। মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রিও হয়ে যাচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মোট ২২ জায়গায় চিঠি লিখেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আনন্দমোহনবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে স্কুলশিক্ষা দফতর পর্যন্ত সম্ভাব্য সব জায়গাতেই অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে কাজের কাজ হয়নি।”

অভিভাবকদের অভিযোগ, এই জবর দখলের পিছনে রয়েছে শাসকের মদত। সে কারণেই অভিযোগ জানিয়ে লাভ হচ্ছে না। অভিভাবকদের দাবি, অবিলম্বে জবরদখল তুলে দিয়ে স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মহাদেব বাগ বলেন, ‘‘এই জবরদখলের সঙ্গে শাসকদলের কেউ যুক্ত নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, প্রাচীন স্কুলটিতে জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন তাঁরাই। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “স্কুলের ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনও বেআইনি নির্মাণের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানালেই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Construction School হলদিয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE