রাজবাড়িতে পরিদর্শনে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র
হেরিটেজ ঘোষণার পরেও ‘দখল’ হয়ে যাচ্ছে দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির জমি। অভিযোগ, রাজবাড়ি চত্বরে বাড়ছে অসামাজিক কাজও। সম্প্রতি এ বিষয়ে নাড়াজোল রাজবাড়ি পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটি ছবি-সহ অভিযোগ জানায় হেরিটেজ কমিশনে। এরপরই বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের নির্দেশে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজবাড়িতে পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।
রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে নাড়াজোল রাজবাড়ি চত্বরে থাকা হাওয়া মহল, জলহরি, রাজবাড়ি, ষষ্ট শিবালয়, রাসমঞ্চ সমাধি মন্দির-সহ একাধিক স্থাপত্যকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি হেরিটেজ কমিশন এই সব স্থাপত্য সংস্কারের কাজও শুরু করেছে। এখন জোরকদমে চলছে হাওয়া মহল সংস্কারের কাজ। ফের দেড় কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে। মাঝে মধ্যেই হেরিটেজ কমিশনের তরফে রাজবাড়ি পরিদর্শন করা হয়।
যদিও অভিযোগ উঠছে, পরিদর্শনের পরেও রাজবাড়ি চত্বরের জমি দখল করে হচ্ছে অবৈধ নির্মাণ। রাজবাড়ি চত্বরের বিভিন্ন এলাকায় বসছে মদ, গাঁজার আসর। নানা ভাবে স্থাপত্যগুলিও নষ্ট করা হচ্ছে। একাধিক জলাভূমি ভরাট করেও গজিয়ে উঠছে বেআইনি নির্মাণ। এমনকী জলহরির অংশও দখল করে নিচ্ছে স্থানীয়দের একাংশ। তার জেরে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নাড়াজোল রাজবাড়ি পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক সন্দীপ খান বলেন, “হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত জমিগুলি দখল হয়ে যাচ্ছে। তাই হেরিটেজ কমিশনে জানিয়ে ছিলাম।”
তার জেরেই হেরিটেজ কমিশন জেলাশাসককে বিষয়টি দেখার আর্জি জানান। তারপরেই বুধবার পরিদর্শন হয় বলে জানা গিয়েছে। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক (ডিপিএলও) অয়ন নাথের নেতৃত্বে প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা নাড়াজোল রাজবাড়িতে আসেন। ছিলেন বিধায়ক মমতা ভুঁইয়াও।
তাঁরা জলহরি, হাওয়া মহল, রাজবাড়ি, রাসমঞ্চ-সহ প্রতি এলাকা ঘুরে দেখেন। এলাকার পর্যনের উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করেন। কোথায় কী বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে তাও দেখেন। জেলা প্রকল্প আধিকারিক অয়ন নাথ বললেন, “হেরিটেজ কমিশনের নজরদারিতে নাড়াজোলে বিভিন্ন স্থাপত্যের সংস্কার চলছে। জেলাশাসকের নির্দেশে ওখানে গিয়ে পর্যটনের উন্নতি কী ভাবে করা যায় এ সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজবাড়ি পুরাতত্ত্ব কমিটির নানা অভিযোগ ছিল। সব দেখা হয়েছে।” অয়নবাবু বলেন, “এমনিতে সমস্যা নেই। জেলাশাসক নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। সব কাজই শুরু হবে।”