Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুড়ে মৃত্যু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর

ওই কিশোরী স্থানীয় হরিনারায়ণপুর হাইস্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডেবরা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

ফল প্রকাশের এক সপ্তাহ আগে পুড়ে মৃত্যু হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীর। অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে সে।

বছর খানেক আগে যুবক-কিশোরীর সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়। এরপর কিশোরীর পরিবারেরই এক বিবাহিত তরুণীর সঙ্গে ফের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। দুই পরিবার আলোচনায় বসলে পুরনো প্রসঙ্গ ওঠে। এর কয়েকঘণ্টা পরেই উদ্ধার হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই কিশোরীর অগ্নিদগ্ধ দেহ।

বৃহস্পতিবার সকালে ডেবরার ভবানীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোঙ্গুরপুর গ্রামে উদ্ধার হয় রিয়া হান্দোল (১৬) নামে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর দেহ। পরিবার সূত্রের খবর, সকালে বাড়িতে থাকা কেরোসিনের বোতল নিয়ে শৌচাগারে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল রিয়া। কিছুক্ষণ পরই বিকট চিৎকার। পরিজনেরা দেখতে পান, শৌচাগার থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। দরজা ভেঙে ঢুকে দেখা যায়, রিয়ার শরীরের অনেকটা অংশ পুড়ে গিয়েছে। তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

ওই কিশোরী স্থানীয় হরিনারায়ণপুর হাইস্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের এই হান্দোল পরিবারের অধিকাংশ পুরুষ ভিন রাজ্য কর্মরত। ওই কিশোরীর বাবা বিদ্যুৎও কর্মসূত্রে মেরঠে থাকেন। বাড়িতে মা মল্লিকার সঙ্গে থাকে রিয়া। বছর খানেক আগে তার সঙ্গে পাড়ার এক যুবকের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিশোরীর পরিবার সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। নানা অশান্তির পর সম্পর্ক ভেঙে যায়। এই নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। তার মাঝেই গত ১২ মে রাতে ওই হান্দোল বাড়ির ছাদে ওই পরিবারের এক বিবাহিত তরুণীর সঙ্গে ওই যুবককে দেখা যায়।

এই ঘটনায় বুধবার রাতে আলোচনায় বসেছিল দুই পরিবার। মৃত কিশোরীর জেঠু স্বপন হান্দোল বলেন, “ওই যুবকের জন্য আমাদের পরিবারটি ভেসে গেল। বাড়ির এক বৌমা ও ওই যুবককে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে নতুন করে রিয়ার প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। সেই নিয়ে রিয়ার মা মল্লিকা ওকে বকুনি দিয়েছিল। মনে হচ্ছে এতেই আমাদের মেয়ে অপমানিত বোধ করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” আলোচনায় উপস্থিত ওই যুবকের দাদা বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনাটি নিয়ে আপাতত কিছু বলতে চাইছি না।’’

ঘটনায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। মেরঠ থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন মৃতের বাবা। বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন মল্লিকা। এই ঘটনায় পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে রিয়া। ঘটনায় মর্মাহত মৃত কিশোরীর স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরা। বৈকণ্ঠপুর হরিনারায়ণপুর হাইস্কুলের টিচার ইন-চার্জ মানস সামন্ত বলেন, “মেয়েটি পড়াশুনোয় মাঝারি মানের ছিল। মানসিক দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য স্কুলে প্রতি সপ্তাহে একদিন কাউন্সেলিং ক্লাস হয়। তাও এমন ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Madhyamik Examination Debra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE