কয়েক ঘর তফসিলি পরিবারের সামাজিক বয়কটে দাঁড়ি টানতে তৎপর হল পুলিশ। নারায়ণগড়ের কুশবসান গ্রাম পঞ্চায়েতের দশরুই গ্রামের ওই সমস্যা মেটাতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যরা।
তার আগে সোমবার রাতে খড়্গপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই বিভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে বসে মহোৎসবের আয়োজনের নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার। তারপর এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ২২ জুন গ্রামে ঘটা করে শীতলা পুজো হবে। সব পক্ষ মিলে আয়োজন করবে ওই মহোৎসবের। জেলা পুলিশ সুপার ভারতীদেবী বলেন, “ওঁদের বুঝিয়ে বলেছি, একসঙ্গে শীতলা পুজোর মহোৎসবের আয়োজন করতে। আমিও ওই দিন যাব। সকলের হাতের রান্না আমি নিজে খাব।”
গত বছর শীতলা পুজোকে কেন্দ্র করে সমস্যার সূত্রপাত। প্রসাদ বিতরণের সময়ে খোকনের রুইদাসের ১০ বছরের ছেলে শুভম জল দিতে নিলে গ্রামের মাতব্বরেরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ। সেই সমস্যার জেরে এ বারের শীতলা পুজোয় গ্রামের ১৪টি তফসিলি পরিবারকে সামিল হতে না দেওয়ার নিদান জারি হয়। তা অমান্য করে পুজোয় যোগ দেওয়ায় ওই ১৪টি পরিবারকে একঘরে করার অভিযোগ উঠেছিল।
এরপর মহকুমাশাসক, বিডিও সমস্যা মেটাতে গ্রামে এলেও সুরাহা হয়নি। গত ২৮ এপ্রিল মতুয়া সঙ্ঘ-সহ বেশ কয়েকটি তফসিলি সংগঠনের তরফে নারায়ণগড় থানা ও বিডিওর কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সমস্যা মেটেনি তাতেও। তারপরই তৎপর হন খোদ পুলিশ সুপার। সোমবার খড়্গপুরে গ্রামের দু’পক্ষকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তিনি। তারপর জানিয়ে দেন, কোনও ভাবেই বয়কটের মতো ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।
সামাজিক বয়কটের শিকার বিজয় দাস, খোকন রুইদাসেরা বলেন, “বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা একসঙ্গে মহোৎসব করব বলে ঠিক হয়েছে।” এই আন্দোলনে যুক্ত সমাজকর্মী রবীন্দ্রনাথ সিংহ বলছিলেন, “দু’পক্ষের সদিচ্ছা থাকলে সমস্যার সমাধান হবেই।”