Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের কোন্দলে তপ্ত গড়বেতার গ্রাম, ধৃত চার

তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উত্তপ্ত হল গড়বেতার কাদরা উত্তরবিল গ্রাম। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সয়দার আলি খানের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। অভিযোগ, শনিবার রাতে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর চার জনকে মারধর করে সয়দার অনুগামীরা। তার জেরে রবিবার সকালে সয়দারের বাড়ি ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০১:১৭
গড়বেতায় পুলিশি টহল। —নিজস্ব চিত্র।

গড়বেতায় পুলিশি টহল। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উত্তপ্ত হল গড়বেতার কাদরা উত্তরবিল গ্রাম। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সয়দার আলি খানের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। অভিযোগ, শনিবার রাতে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর চার জনকে মারধর করে সয়দার অনুগামীরা। তার জেরে রবিবার সকালে সয়দারের বাড়ি ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভ চলাকালীন সয়দার গোষ্ঠীর লোকজন গুলি ছোড়ে বলেও অভিযোগ। তবে কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ গিয়ে সয়দার-সহ চারজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের আজ, সোমবার গড়বেতা আদালতে হাজির করা হবে।

গুলি চলার কথা অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকায় গিয়ে গুলির খোল বা গুলি চলার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “গোলমালের খবর পেয়েই পুলিশ এলাকায় গিয়েছিল। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” ঘটনার সঙ্গে দলের যোগ মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “সব ঘটনায় দলকে জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। গড়বেতার ঘটনাটি একেবারে স্থানীয় ব্যাপার। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই!”

নব্য তৃণমূলীদের সঙ্গে দলের পুরনোদের দ্বন্দ্ব পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন নয়। গড়বেতার কাদরা উত্তরবিলেও এই দ্বন্দ্ব রয়েছে। এখানে বিরোধ মূলত স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহতাবউদ্দিন মল্লিকের অনুগামীদের সঙ্গে সয়দার অনুগামীদের। সয়দার আগে সিপিএম ঘেঁষা ছিলেন। পালাবদলের পরে তিনি তৃণমূলে এসেছেন। সয়দারের নামে আগেও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যে পালাবদলের আগে তিনি বেশ কিছু বছর জেলেও ছিলেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, সয়দারের মোরাম-বোল্ডারের ব্যবসা রয়েছে। এলাকার বিভিন্ন কাজে তিনি মোরাম-বোল্ডার সরবরাহ করেন। সরঞ্জামের মান খারাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবাদ করা যায় না। প্রতিবাদ করলেই সয়দারের দলবল মারধর করে। তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি দিলীপ পালের মদতেই সয়দারের দলবল এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।

শনিবার রাতে রবিয়াল মল্লিক, আজিজুল ভাঙ্গি-সহ এলাকার চার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সয়দারের দলবলের হাতে প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। তার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক রাতেই সয়দারের বাড়ি ঘেরাও করেন। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। রবিবার সকালে ফের ঘেরাও শুরু হয়। সয়দারের বিরোধী বলে পরিচিত কাদরা উত্তরবিল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহতাবউদ্দিন মল্লিক বলেন, “সয়দারের লোকেরা যখন-তখন গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার করে। শনিবার রাতেও চারজনকে মারধর করা হয়। এরপরই এলাকার মানুষ সয়দারের বাড়ি ঘেরাও করেন।” স্থানীয় তৃণমূল কর্মী, পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক তহিদুর রহমান মল্লিকেরও বক্তব্য, “এটা জনরোষ। ঘেরাও-বিক্ষোভ চলাকালীন গুলির শব্দও শুনি।”

সিপিএমের গড়বেতা জোনাল কমিটির সম্পাদক দিবাকর ভুঁইয়ার মতে, “ওদের (তৃণমূলের) জন্য সাধারণ মানুষের জীবন নাজেহাল হয়ে উঠছে।” এ দিন বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি দিলীপ পালের সঙ্গে। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। তবে গোষ্ঠী কোন্দলের উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। তাঁর দাবি, “দলের মধ্যে মতবিরোধ নেই। এটা স্থানীয় ব্যাপার।”

garbeta trinamool tmc police municipal election court agitation CPM Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy