ফাইল চিত্র।
কুড়মিদের সামাজিক আন্দোলনে বৃহস্পতিবার পোড়ানো হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল। খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে ওই বিক্ষোভে হাজির ছিলেন তৃণমূলের একাংশ জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরাও। তাঁরা সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিলেও এতে অস্বস্তি শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। জানা যাচ্ছে, ঠিক কারা সেখানে ছিলেন সে ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন গোয়েন্দারাও।
কুড়মি নেতারা একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন। তবে তৃণমূল রীতিমতো সতর্ক। দলের তরফে কর্মীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সামাজিক আন্দোলনে গিয়ে কেউ যেন অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে না জড়ান। রাজ্য তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। কুড়মিদের মধ্যে বহু তৃণমূল সমর্থক রয়েছেন। সামাজিক অবরোধ কর্মসূচিতে তাঁরা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। আন্দোলনের সমর্থনে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করছেন। এই নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ মেনে নেওয়া যায় না।’’
খেমাশুলিতে কুড়মিদের আন্দোলনে ছিলেন ঝাড়গ্রাম পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলর এবং একাংশ আঞ্চলিক স্তরের নেতা-কর্মী। জেলার এক বিধায়কের অনুগামীদেরও ওই কর্মসূচিতে দেখা যায়। দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে জঙ্গলমহলে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সামাজিক মেরুকরণ। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে আমার মন্তব্য না করাই ভাল।’’ তবে প্রাক্তন মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘কুড়মিদের ন্যায্য দাবিগুলির প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ নিন্দনীয়।’’ চূড়ামণি জুড়ছেন, রাজ্যের তরফে কুড়মিদের দাবিগুলি নিয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীরও সহমর্মিতা রয়েছে।
তৃণমূলের একাংশ অবশ্য আড়ালে মানছেন, কুড়মিদের দাবিগুলি নিয়ে রাজ্যের তরফে আরও ইতিবাচক পদক্ষেপ করা জরুরি ছিল। শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই কুড়মি সম্প্রদায়ের। তাঁরাও কুড়মিদের বঞ্চনার বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করছেন নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। খেমাশুলিতে কুড়মিদের অবরোধ স্থলে ঝুমুর গান পরিবেশন করেছিলেন জঙ্গলমহলের বিশিষ্ট শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো। তিনি বলছেন, ‘‘আট মাস আগে সামাজিক সংগঠনের তরফে সরকারকে জানানো হয়েছিল, দাবি পূরণ না হলে অবরোধ হবে। তারপরও সরকারিস্তরে কিছুই হয়নি। অবরোধের ফলে সবারই সমস্যা হচ্ছে। তবে এ জন্য সরকারই দায়ী।’’
অন্য দিকে সূত্রের খবর, সামাজিক আন্দোলনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহের বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। কুশপুতুল দাহ করার সময়ে শাসকদলের কারা-কারা ছিলেন সেই খোঁজও নেওয়া হচ্ছে। যদিও পুলিশের তরফে এ বিষয়ে কেউই মন্তব্যকরতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy