E-Paper

জমি-জঙ্গলের মতোই মেয়েদের রক্ষার ডাক

ক’দিন আগে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের এক গ্রামে আট দিনের শিশুকন্যাকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ঠাকুমা। ওই শিশুকন্যার মা আবার নাবালিকা। শিশুটি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি। শ্বাসকষ্ট কমলেও খিঁচুনি কমেনি।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৩১
গ্রামের ছাত্রীদের সঙ্গে নিজস্বী তুললেন জেলাশাসক।

গ্রামের ছাত্রীদের সঙ্গে নিজস্বী তুললেন জেলাশাসক। —নিজস্ব চিত্র।

যে তল্লাটের মানুষ জঙ্গল আর বনভূমি বুক দিয়ে আগলে রাখেন, একই মনোভাবে তাঁদের কন্যাসন্তান আগলানোর আহ্বান জানালেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর।

ক’দিন আগে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের এক গ্রামে আট দিনের শিশুকন্যাকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ঠাকুমা। ওই শিশুকন্যার মা আবার নাবালিকা। শিশুটি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি। শ্বাসকষ্ট কমলেও খিঁচুনি কমেনি। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, বিষক্রিয়ায় সদ্যোজাতের মস্তিষ্ক ও শরীরের নানা অংশে ক্ষতি হতে পারে।

শনিবার সেই শিশুকন্যার গ্রামেই সচেতনতা শিবিরে গিয়ে জেলাশাসকের বার্তা, “এই জঙ্গলমহলের মানুষজন জমি-জঙ্গল রক্ষার জন্য আন্দোলনে নামেন। এ বার থেকে বাল্যবিবাহ রোধের আন্দোলনেও নামুন। একটি শিক্ষিত মেয়ে পুরো বাড়ি, গ্ৰাম, রাজ্যকে বদলে দিতে পারে। ছোট বয়সে বিয়ে দিলে স্বপ্ন থেমে যায়, পড়াশোনা থেমে যায়। এটা শুধু মেয়েদের ক্ষতি নয়, সমাজের ক্ষতি। বাল্যবিবাহ হতে দেব না, এই সঙ্কল্প আমাদের সকলকে নিতে হবে।”

সরকারি খাতায় পিছিয়ে পড়া জেলা হলেও ঝাড়গ্রামের মন্ত্রী, জেলা সভাধিপতি থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন মেয়েরাই। সেখানে গোপীবল্লভপুরের এই ঘটনা সর্বস্তরে ধাক্কা দেয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ইতিমধ্যে গ্রামে মেয়েদের যত্নের বিষয়ে সচেতনতার পাঠ দেওয়া হয়েছে। শনিবারের শিবিরে স্থানীয় কুশমাড়-তেঁতুলিয়া হাই স্কুলের পড়ুয়া সায়ন্তিকা, সঞ্চিতা, শিল্পারা নাটকের মাধ্যমে নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, শিশুকন্যা হত্যার মতো ঘটনা রোখার বার্তা দেয়। জেলাশাসক আকাঙ্ক্ষা মাটিতে বসেই পড়ুয়াদের সঙ্গে ‘আজকের অগ্নিকন্যা’ নাটকটি দেখেন। সেই নাটক থেকেও বাল্যবিবাহ রোধের শপথ নেওয়া হয়।

মহকুমাশাসক (ঝাড়গ্রাম) অনিন্দিতা রায়চৌধুরী গ্ৰামবাসীকে মনে করান, “ছেলে-মেয়ে একই ব্যাপার। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে মেয়ের বিয়ে দেবেন না।” অনুষ্ঠান শেষে পড়ুয়াদের আবদারে তাদের সঙ্গে নিজস্বী তোলেন প্রশাসনের কর্তারা। গ্রাম ছাড়ার আগে জেলাশাসক বলেন, “এই গ্রামের মেয়েরা অনেক সচেতন। আশা করি, এমন আর ঘটবে না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Girl child New Born Girl Child Jhargram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy