হলদিয়ার একটি বন্ধ কারখানা। নিজস্ব চিত্র
কারখানা বন্ধ। তাই কেউ কাজ হারিয়ে বাড়িতে বেকার হয়ে বসে রয়েছেন। আবার কেউ দিনমজুরি করছেন। এরই মধ্যে শিল্প শহর হলদিয়ায় চালু হল শ্রমিক মেলা। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কাজহারা শ্রমিকেরাই!
হলদিয়ার দুর্গাচকে শুক্রবার থেকে শ্রমিক মেলা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের জন্য কী প্রকল্প রয়েছে, সরকারি কী সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন শ্রমিকেরা সে সবই জানানো হচ্ছে শ্রম দফতরের বিভিন্ন স্টলে। যদিও কাজহারা শ্রমিকদের অনেকেরই অভিযোগ, সুযোগ-সুবিধা কিছুই পাননি তাঁরা।
হলদিয়ার রামনগরের বাসিন্দা উত্তম দাস জানালেন, তিনি যে কারখানায় কাজ করতেন ২০১৫ সালে তার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। তারপর আর কোনও কাজ জোটেনি। ক্ষতিপূরণ বা সরকারি সহায়তাও পাননি। রামনগরেরই বাসিন্দা শিবনাথ দাসের কথায়, ‘‘তিন বছর কাজ করার পরে আমাদের কারখানাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই।’’ এঁরা দুজনেই রোহিত ফেরোটেকে কাজ করতেন।
বস্তুত, গত কয়েক বছরে হলদিয়ায় রোহিত ফেরোটেক, এন আর কোক, কে এস অয়েল, রেণুকা সুগার, জেভিএলের মতো বেশ কিছু শিল্প সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। শ্রমিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে শ্রমিক মেলা আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠছে।
এ নিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শ্যামলকুমার মাইতি বলেন, ‘‘তৃণমূল আমলে গত সাত বছরে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে। শাসক দলের গা জোয়ারি মনোভাবের জন্যই এমনটা হচ্ছে।’’ সিপিএম নেতাদের আরও দাবি, হলদিয়ায় শিল্পের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়নি। পাল্টা তোলাবাজি আর সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছে তৃণমূল।
হলদিয়ার তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য শিল্পক্ষেত্রে মন্দার দায় বামেদের ঘাড়েই চাপাচ্ছেন। পুর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস শ্রমিক মেলার উদ্বোধনে এসেছিলেন। সেখানেই তিনি অভিযোগ করেন, বাম আমলে প্রশাসনিক অপদার্থতার জন্য কারখানা বন্ধ হয়েছে। আর বর্তমান তৃণমূল সরকার সব কারখানা চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy