Advertisement
E-Paper

আমপানের উপর কালবৈশাখীর ঘা

৭৫৬টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০২:০১
তছনছ: বাজ পড়ে মাটির বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গুড়গুড়িপালের শালিকা গ্রামে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

তছনছ: বাজ পড়ে মাটির বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গুড়গুড়িপালের শালিকা গ্রামে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

ঘূর্ণিঝড় আমপানের ক্ষত শুকোয়নি। তার উপরে এ বার কালবৈশাখী।

বুধবার রাত থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। জেলার সব ব্লকই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কাঁচা বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, শালবনি ব্লকেই ৬৭টি বাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭৫৬টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপালের শালিকার বাসিন্দা কানু দোলুই। তাঁর খড়ের বাড়ি বজ্রপাতে পুড়ে গিয়েছে। পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার কানু বলছিলেন, ‘‘বাজ পড়ে বাড়িটা পুড়ে গিয়েছে।’’ দুর্যোগের দিনে এক পড়শির বাড়িতে ছিলেন ওই বিড়ি শ্রমিক। তাঁর কথায়, ‘‘ধোঁয়া দেখে পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। আমিও বেরিয়ে আসি। এসে দেখি সব শেষ!’’ ঘূর্ণিঝড়েও তাঁর বাড়ির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছাউনির একাংশ উড়ে গিয়েছিল। কানু বলছিলেন, ‘‘এ বার ঘরের যেখানে যা ছিল, চাল- ডাল, বিছানাপত্র, টাকাপয়সা, কিচ্ছু আর নেই। সব পুড়ে গিয়েছে। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড কিচ্ছু নেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অমিত দোলুই বলেন, ‘‘আমরা বেরিয়ে এসে দেখি, ওই বাড়িটা জ্বলছে। দ্রুত আগুন নেভানো হয়েছে। না হলে পাশের বাড়িগুলিতেও আগুন লেগে যেত।’’ মেদিনীপুর শহরের একটি বাড়িও বাজ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ দিন শালিকায় গিয়েছিল ব্লক প্রশাসনের একটি দল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে দলটি। কানুর সঙ্গে কথাও বলেছে। মেদিনীপুরের (সদর) বিডিও ফারহানাজ খানম বলেন, ‘‘শালিকার ওই ঘটনার কথা জানি। সবদিক দেখতে একটি টিম পাঠিয়েছি। ওঁকে (কানুকে) যে সাহায্য করার আমরা করব।’’ আমপানের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছিল খড়্গপুর মহকুমায়। বিশেষ করে দাঁতন- ১, দাঁতন- ২, মোহনপুর প্রভৃতি ব্লকে। মেদিনীপুর সদর, শালবনি, কেশপুর প্রভৃতি ব্লকে ঘূর্ণিঝড়ের তেমন মারাত্মক প্রভাব পড়েনি। এই সমস্ত ব্লকে অবশ্য কালবৈশাখীর প্রভাব পড়েছে। ব্লকগুলি জানাচ্ছে, দু’- একদিনের মধ্যেই বিস্তারিত রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রতিমা দাস বলেন, ‘‘ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

বুধবার রাতভর মেদিনীপুরে প্রায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবংয়ে প্রায় ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঘাটালে তুলনায় কিছুটা কম, প্রায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় গড় বৃষ্টি হয়েছে ৬৭.৫ মিলিমিটার। মেদিনীপুর শহরেরও নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কিছু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। নাস্তানাবুদ হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সামনে এসেছে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার ছবিটা। মেদিনীপুরের পুর- প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষের আশ্বাস, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার আরও উন্নতির চেষ্টা চলছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঝড়বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় সমস্যা হয়েছিল। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone Kalbaishakhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy