দোরগোড়ায় দুর্গাপুজো। এ বার পুজো মণ্ডপকেই ডেঙ্গি সচেতনতার কাজে ব্যবহার করতে তৎপর হল খড়্গপুর পুরসভা। এ জন্য থাকছে পুরস্কারও।
পুরকর্তারা ঠিক করেছেন, থিমে ডেঙ্গি-সচেতনতার বার্তা উঠে এলে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করবেন। তেমন হলে পুরসভার তরফে কিছু অর্থসাহায্যও করা হবে। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “সব দিক দেখেই আমরা ঠিক করেছি, শহরের যে সব পুজোর থিমে ডেঙ্গি-সচেতনতার বার্তা থাকবে, তাদের পুরসভা পুরস্কৃত করবে।”পাশাপাশি মণ্ডপের সামনে ডেঙ্গি সম্পর্কিত সচেতনতামূলক ফেস্টুন রাখার জন্যও শহরের সব পুজো কমিটিকে আবেদন জানাবে পুরসভা। পুরসভার দেওয়া এই ফেস্টুনে লেখা থাকবে, মশাবাহিত রোগ এড়াতে কী করা উচিত, আর কী নয়। পুরপ্রধান প্রদীপবাবুর কথায়, “আমরা চাইছি, মানুষ পুজো দেখুন, ডেঙ্গি নিয়েও সচেতন হোন।” এই উদ্যোগ সমর্থন করছে স্বাস্থ্য দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, “এটা দারুণ উদ্যোগ।”
গত বছর ঘাটালের এক পুজোর থিমে ডেঙ্গি-সচেতনতার কথা উঠে এসেছিল। মণ্ডপটাই তৈরি হয়েছিল আস্ত একটা মশার আদলে। এ বার খড়্গপুরে ডেঙ্গির সচেতনতামূলক প্রচারে পুরসভাকে সব রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে পুজো কমিটিগুলোও। আদি পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভা ফেস্টুন-ব্যানার দিলে তা আমরা মণ্ডপের সামনে রাখব। এটা তো আমাদের কর্তব্যও।” বিবেকানন্দপল্লি পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা অমিত হালদারের কথায়, “এখন পুজোর থিম অনেক আগে ঠিক হয়ে যায়। তবে সচেতনতামূলক প্রচারে সব রকম সহায়তা করা হবে।”
জেলা জুড়েই এ বার ডেঙ্গি ছড়িয়েছে। তবে রোগের বাড়বাড়ন্ত খড়্গপুরে। গোটা জেলার ৭৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে ৭০ জনই এই শহরের বাসিন্দা। অথচ এ বার ডেঙ্গি মরসুমের গোড়ায় পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর মশা বিরোধী অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বাড়ি বাড়ি পুরসভার সমীক্ষকদের পাঠিয়ে শুরু হয়েছিল তথ্য সংগ্রহ। তবে সে কাজ যথাযথ ভাবে হয়নি বলেই অভিযোগ। শহরবাসী জানাচ্ছেন, রাস্তা জুড়ে আবর্জনা, জমা জলে কিলবিল করছে মশা। অথচ নিয়মিত সাফাইয়ে নজর নেই পুরসভার। খড়্গপুরের এক প্রবীণ বাসিন্দার মতে, ‘‘মণ্ডপে প্রচারের পাশাপাশি পুরসভার উচিত নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করা, মশার তেল স্প্রে করা। না হলে সবই বৃথা।’’
ডেঙ্গি মোকাবিলায় সোমবারই খড়্গপুরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতর ও রেল আধিকারিকদের নিয়ে ওই বৈঠকে একটি নজরদারি কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ তদারক করবে এই কমিটি। পুরপ্রধানেরও আশ্বাস, আবর্জনা সাফাই থেকে মশা মারার তেল ছড়ানো, সব কাজই নিয়ম মেনে করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy