শোকার্ত: মৃতদেহ খানাকুলের ময়াল গ্রামে আসার পর। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
লোকেরা জানতেন, দিঘা যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ৬ ছেলে। কিন্তু বিকেল নাগাদ চারজনের মৃতদেহ এলাকায় ঢুকতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন আত্মীয়রা। বাদ গেল না খানাকুলের ময়াল গ্রামও।
আগে অনেকবার দিঘা গিয়েছেন। তবে আরও একবার দিঘায় জোয়ার দেখার কথা স্ত্রীকে বলেছিলেন কিশোরপুর অঞ্চল তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি দীপঙ্কর বর। বুধবার রাতে নিজের গাড়িতে পাঁচ সঙ্গীকে নিয়ে দিঘা রওনা হন তাঁরা। রাত দুটো নাগাদ দীপঙ্করের ভাই, কিশোরপুর-১ এর পঞ্চায়েত প্রধান সন্দীপ বরকে পুলিশ দুর্ঘটনার খবর দেয়। রাত তিনটে নাগাদ সন্দীপ কয়েকজনকে নিয়ে বেরিয়ে যান। সকালেই দাদা-সহ চারজনের মৃত্যুর খবর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন তিনি। বাড়ির লোকেদের খবরটা জানাতে তিনি বারণ করেছিলেন।
দীপঙ্করের বৃদ্ধ বাবা নিমাই বর অবশ্য মানুষের জমায়েত দেখে বারবার প্রশ্ন করছিলেন, “এত ভিড়, ছেলেটা কী বেঁচে নেই?” ততক্ষণে এলাকায় মোবাইলে মোবাইলে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ছবি ঘুরছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কান্নার রোলে আর কিছুই গোপন ছিল না। বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন দীপঙ্করের স্ত্রী ঝুমাও।
ওই এলাকাতেই থাকেন রাজু পণ্ডিতও। তিনি মাছ ব্যবসায়ী। প্রসেনজিৎ দিগর আর দিলীপ সামন্ত বন্দিপুরের বাসিন্দা। রাজুর স্ত্রী টগরী পণ্ডিত বলেন, “হঠাৎ বলল, বন্ধুরা মিলে দিঘা যাবে। আমি অনেক বারণ করেছিলাম। শুনলই না।’’
ওই দলের সদস্যদের মধ্যে কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েত সদস্য শীতল মাঝি এবং আশিস সানকি কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দলের কর্মীদের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জেলা সভাপতি যোগাযোগ করেন রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। শুভেন্দু, পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তাদের নির্দেশ দেন, মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য। দিলীপ বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় দ্রুত সব মিটেছে। শুভেন্দুবাবুকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’’ এ দিন বিকেল ময়াল গ্রামে গিয়ে মৃতদের শ্রদ্ধাও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy