Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বড় পুকুর সংস্কার, ছোট হচ্ছে ভরাট

শারদোৎসব এ বার অক্টোবরের গোড়ায়। ফলে, বর্ষা চলে গেলেই পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যাবে। পুজো শেষে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হবে পুকুরেই। তাই বর্ষার আগে পুকুর সংস্কারে নামল খড়্গপুর পুরসভা।

সংস্কার চলছে মালঞ্চ গিট্টু জমিদারের পুকুর (বাঁ দিকে)। সুভাষপল্লি কালীমন্দিরের পুকুর ভরাট হচ্ছে অবাধে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

সংস্কার চলছে মালঞ্চ গিট্টু জমিদারের পুকুর (বাঁ দিকে)। সুভাষপল্লি কালীমন্দিরের পুকুর ভরাট হচ্ছে অবাধে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ০১:২২
Share: Save:

শারদোৎসব এ বার অক্টোবরের গোড়ায়। ফলে, বর্ষা চলে গেলেই পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যাবে। পুজো শেষে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হবে পুকুরেই। তাই বর্ষার আগে পুকুর সংস্কারে নামল খড়্গপুর পুরসভা।

পুজোর কথা মাথায় রেখে পুরসভার এই সক্রিয়তা দেখা গেলেও শহরবাসীর অভিযোগ কিন্তু অন্য। রেলশহরের বহু ছোট-ছোট পুকুরে আগে বিসর্জন হত। অভিযোগ, সেই পুকুরগুলির অধিকাংশ সংস্কার ও নজরদারির অভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলরেরা উদাসীন থাকায় অবাধেই চলছে পুকুর ভরাট। এই অবস্থায় দাবি উঠছে, পুরসভার উচিত সেই পুকুরগুলিরও সংস্কার করা।

খড়্গপুরের পরিধি বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে ছোট-বড় কয়েকশো পুকুর খনন হয়েছিল। মন্দিরতলা পুকুর, সুভাষপল্লি পদ্মপুকুর, কৌশল্যা পুকুর, গিড্ডু জমিদারের পুকুর, সাঁজোয়ালের হিরণ পুকুর, ইন্দার ঝরিয়াপুকুর প্রভৃতি হল বড় পুকুর। এ ছাড়াও বিভিন্ন পাড়ায় একাধিক ছোট পুকুর রয়েছে।

বছর পনেরো আগেও ছোট পুকুরগুলিতে দু’-একটি প্রতিমা বিসর্জন হত। আর শহরের অধিকাংশ বিসর্জন হত বড় পুকুরগুলিতে।মন্দিরতলা, পদ্মপুকুর, গিড্ডু জমিদারের পুকুর ও কৌশল্যার পুকুরে সব থেকে বেশি বিসর্জন হত। সংস্কারের অভাবে প্রতিবছর ওই পুকুরগুলিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারা। এ বার তাই এই পুকুরগুলি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। এমনকী পুকুরের নির্দিষ্ট স্থান বিসর্জনের জন্য ব্যবহার করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, মন্দিরতলায় বিসর্জনের জন্য নির্দিষ্ট একটি ঘাট বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘আমরা বর্ষার আগেই সব বড় পুকুরের সংস্কার কাজ সেরে ফেলতে চাইছি। কৌশল্যার পুকুরে আইনি জটিলতা কাটিয়ে পুকুরের সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। পদ্মপুকুরের মতো পুকুরও সংস্কার করব। পুজোর পরেও পুকুর পরিষ্কার করা হবে।’’ মন্দিরতলা পুকুর সংস্কারে স্থানীয়রাই প্রথমে উদ্যোগী হন। এখন পুরসভার সহযোগিতায় ওই কাজ চলছে। মালঞ্চর গিড্ডু জমিদারের পুকুরে সংস্কারের কাজেও নামতে চলেছে পুরসভা।

পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন শহরবাসী। তবে শহর জুড়ে একের পর এক ছোট পুকুর ভরাট হওয়া নিয়ে রয়েছে ক্ষোভ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু অসাধু মানুষ ওই পুকুর ভরাটে জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় পুকুর ভরাট হচ্ছে বলেও অভিযোগ। খড়্গপুর শহরের ইন্দা বিদ্যাসাগরপুরের একটি পুকুর ভরাটকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কাউন্সিলরের উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে। আবার শহরের সুভাষপল্লি এলাকাতেও কালীমন্দির পুকুর, মহিষাপুকুর, স্টার ইউনিট ক্লাব সংলগ্ন পুকুর ভরাট হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ দে, কমল পালরা বলেন, ‘‘এলাকায় একের পর এক পুকুর ভরাট হচ্ছে। কাউন্সিলররা সব জেনেও নির্বিকার। পুরসভাকে জানানো হলেও সুফল মিলছে না।’’

যদিও পুরপ্রধান প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘পুকুর ভরাট হচ্ছে এটা ঠিক। তবে অভিযোগ এলেই আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। সুভাষপল্লি কালীমন্দির পুকুরে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। পুরসভাকে ওই পুকুর হস্তান্তর করা হলে আমরা পুকুরটি সাজিয়ে তুলব। তবে অনেকক্ষেত্রে মিথ্যা অভিযোগ আসছে। স্থানীয় মানুষকে সচেতন
হয়ে পুকুর ভরাট রুখতে এগিয়ে আসতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ponds renovation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE