কেনাকাটা চলছে। নিজস্ব চিত্র
বহু বছর ধরে একটা সোনার ঝুমকোর শখ প্রতিমা দেবীর। কিন্তু কিনব কিনব করেও শেষ মুহূর্তে আর কেনা হয় না। তবে এ বার আর সোনা কেনার সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনি। শুক্রবার সকালেই বৌমাকে সঙ্গে গিয়েছিলেন দোকানে। পছন্দমতো জিনিসও পেয়েছেন। তবে এখানেই শেষ হয়, ধনতেরস উপলক্ষে দোকান থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন একটা রুপোর কয়েন।
প্রতিমাদেবীর মতো অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন সোনার দোকানে। শুক্রবার, ধনতেরসের সকাল থেকেই ভিড়ে ঠাসা রইল কাঁথির সোনার দোকান। আর ভিড় সামলাতে গলদঘর্ম হয়েছেন দোকানদাররা। শুধু সোনার দোকানই নয়, ধনতেরস উপলক্ষে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কেও সোনার কয়েন বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ভারতীয় ডাক বিভাগের তরফেও বিক্রি হয়েছে ‘সোনার বন্ড’। সেখানেও লম্বা লাইন।
কাঁথির একটি সোনার দোকানের মালিক বিকাশ কামিল্যা বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর পর থেকেই সোনা কেনা শুরু হয়ে যায়। আর সামনেই তো বিয়ের মরসুম। তাই ধনতেরসে সোনা কিনে রাখেন অনেকেই।’’ তিনি আরও জানান, বছর খানেক আগেও কয়েকবছর আগেও ধনতেরস নিয়ে বাঙালি মহিলাদের উৎসাহ ছিল না। তবে গত দু’তিন বছরে ছবিটা বদলে গিয়েছে অনেকটাই। ধনতেরস উপলক্ষে গয়নার মজুরিতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে নানা উপহারেরও। কাঁথির আর একটি সোনার দোকানের মালিক অজিত কামিল্যা বলেন, ‘‘ মজুরিতে ছাড় মিলছে। আর ১০ গ্রামের উপর সোনা কিনলেই রূপোর লক্ষীনারায়ণ মূর্তি উপহার দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের।’’
কাঁথি শহরের বধূ মঞ্জু মুন্দ্রা জন্মসূত্রে রাজস্থানী। তিনি জানান, ধনতেরস আসলে রাজস্থানীদের একটি উৎসব। কালী পুজোর অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতে রাজস্থানী মহিলারা বাড়িতে লক্ষী পুজোর আয়োজন করে থাকেন। পরিবারের সম্বৃদ্ধি আর সৌভাগ্যের কামনায় মহিলারা সোনা কেনে। এমনকী সোনা কেনার ক্ষমতা না থাকলে যে কোনও ধাতুর জিনিস কেনাও যেতে পারে। কাঁথির একটি সোনার দোকানে গয়না পছন্দ করছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষিকা অসীমা গুড়িয়া। তাঁর কথায়, ‘‘ওজনে হাল্কা সোনার গয়নাই কিনেছি। এতে কিছুটা বিনিয়োগও হল, আবার প্রতিদিন ব্যবহারও করা যাবে।’’শহরের তরুণ স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিভাস কামিল্যা জানালেন, সাত থেকে দশগ্রাম ওজনের সোনার আংটি, কানের দুল, বালা আর চুড়ির বিক্রি বেশি। নেকলেস, গলার হারও বিকোচ্ছে ভালই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy