Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পান্তা ভাতেই লাঞ্চ সাঁওতালি মহানায়িকার

পান্তা ভাতের তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে প্রচারে যাচ্ছেন সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা বিরবাহা হাঁসদা। পরণে আদিবাসী প্রথার পাঞ্চি শাড়ি। প্রসাধনহীন মুখে স্নিগ্ধ হাসি। 

তৃপ্ত: বাড়িতে বিরবাহা। নিজস্ব চিত্র

তৃপ্ত: বাড়িতে বিরবাহা। নিজস্ব চিত্র

  নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১৬
Share: Save:

পান্তা ভাতের তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে প্রচারে যাচ্ছেন সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা বিরবাহা হাঁসদা। পরণে আদিবাসী প্রথার পাঞ্চি শাড়ি। প্রসাধনহীন মুখে স্নিগ্ধ হাসি।
এ বার ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) এবং ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির জোটের প্রার্থী হয়েছেন বিরবাহা। তিনি প্রার্থী হওয়ায় শাসক ও বিরোধী শিবিরে ভোট কাটাকুটি হিসেব-নিকেশ শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসকের অভিযোগ, বিরোধীদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই প্রার্থী হয়েছেন অভিনেত্রী। বিরোধীদের বক্তব্য, বিরবাহা প্রার্থী হওয়ায় আদিবাসী ভোট কাটাকুটি খেলায় শাসকের লাভ হবে। যদিও বিরবাহা জানাচ্ছেন বড় রাজনৈতিক দল তৃণমূল আর বিজেপি কেউই আদিবাসীদের ভালর কথা ভাবে না। আদিবাসীদের তারা ব্যবহার করে। তাই আদিবাসীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। বিরবাহা বলেন, ‘‘জঙ্গমহলের আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনকে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই রাজনৈতিক ভাবে প্রচারে আসতে চাই। সেই জন্য লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছি।’’
সাঁওতালি সিনেমার এই অভিনেত্রী দু’বেলা ভাত খান। সকালে ও দুপুরে পান্তা ভাত আর রাতে গরম ভাত। ভোটের প্রচারেও খুব একটা হেরফের হচ্ছে না এই রুটিনের। বিরবাহা জানালেন, রোজ সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে পড়েন তিনি। ব্যায়ামের পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরে স্নান সেরে পাঞ্চি শাড়ি পরে তৈরি হয়ে যান প্রচারে বেরোনোর জন্য। কর্মীরাও ততক্ষণে এসে পড়েন। ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লির বাড়ির উঠোনে অপেক্ষায় থাকে বিরবাহার নিজস্ব সাদা রঙের গাড়ি (বলেরো)। সকালে গিয়ে দেখা গেল, রান্নাঘর লাগোয়া ঘরে কাঁসার বাটি ভর্তি পান্তা ভাত আর ছোট একটা থালায় শাক ভাজা, কুচি করে কাটা আলু ভাজা আর ছোট কাঁচা পেঁয়াজ। পরম তৃপ্তির সঙ্গে হাসিমুখে পান্তা ভাত খেতে শুরু করলেন অভিনেত্রী। বললেন, ‘‘নিজেকে সুন্দর করে রাখতে স্নিগ্ধ মনে খাওয়া দরকার। তাই আমি হাসিমুখেই খাই।’’ খাওয়া শেষ করে প্রচারে বেরোলেন বিরবাহা। সঙ্গে ঝোলা ব্যাগে নিলেন টিফিন বক্স ভর্তি মুড়ি আর চারটি বড় জলের বোতল। বাড়ির বাগানের কাঁচা আম খান কতক। নুন লঙ্কা গুঁড়োও কাগজের প্যাকেটে করে সঙ্গে রাখেন অভিনেত্রী। প্রচারে বেরিয়ে কখনও লিকার চা আর শুকনো মুড়ি। তবে দুপুরে কোনও গ্রামে পরিচিত জনের বাড়ি পেলে সেখানে একবাটি পান্তা ভাত আর কাঁচা পেঁয়াজ দিয়ে লাঞ্চ সরেন।
এই সময় জঙ্গল মহলে কেন্দু গাছের কেঁদ ফল পাকার মরসুম। প্রচারে গিয়ে জঙ্গলে প্রান্তরে গাছ থেকে পাকা কেঁদ ফল পেড়েও খান বলে জানালেন বিরবাহা। সেই ফলের মিষ্টি স্বাদে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। সন্ধ্যের আগেই প্রচার থেকে ফিরে ঠান্ডা জলে স্নান। তারপর লিকার চা খেয়ে মায়ের সঙ্গে হাঁটতে বেরোন বিরবাহা। বাইরের খাবার প্রায় খান না। ইচ্ছে হলে কখনও বাড়িতে পেঁয়াজি বানিয়ে খান। তবে রাতে চাই গরম ভাত। সঙ্গে চার রকম আনাজ আর মাছের নানা পদ। তবে সুস্থ আর সতেজ থাকতে পান্তা ভাত তাঁর চাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE