Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
higher studies

বন্ধ এসএসসি, উচ্চ শিক্ষায় অনীহা ছাত্রছাত্রীদের

ভর্তির তারিখ বাড়ালেও খালি আসনে মিলছে না পড়ুয়া।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৩২
Share: Save:

চলতি বর্ষে কলেজগুলিতে ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া। অধিকাংশ কলেজেই বিএ, বিএসসি এবং বি-কমে খালি থেকে গিয়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসন। ভর্তির তারিখ বাড়ালেও খালি আসনে মিলছে না পড়ুয়া। দীর্ঘদিন ধরে এসএসসি-র (স্কুল সার্ভিস কমিশন) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় জেনারেল লাইনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন পড়ুয়ারা। ভর্তি প্রক্রিয়ার এই ছবি দেখে এমনটাই মত শিক্ষাবিদদের একাংশের।

শনিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেদিন মেদিনীপুরের জনসভায় বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্যের প্রতিফলনই যেন দেখা গিয়েছে কলেজে ছাত্র ভর্তির পরিসংখ্যানে। ১৫ ডিসেম্বর ছিল কলেজে ভর্তির শেষ দিন। অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদন করেছিলেন পড়ুয়ারা। কিন্তু এ বার জেলার অনেক কলেজেই স্নাতক স্তরে ভর্তির ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। অথচ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ছবিটা ছিল আলাদা। কলেজে ভর্তি হতে না পারায় কলেজে কলেজে বিক্ষোভ লেগে যেত। কিন্তু হঠাৎই স্নাতকস্তরে ভর্তিতে ভাটা কেন?

পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, বাম আমলে প্রতি বছর এসএসসির মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হত। ন্যূনতম স্নাতক হয়েও বসা যেত পরীক্ষায়। ছ’বছর ধরে রাজ্যে এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ। ফলে জেনারেল লাইনের প্রতি আর আস্থা নেই পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের। চলতি সময় নার্সিং পাঠক্রমের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে একটা বড় অংশের পড়ুয়াদের মধ্যে। সাধারণত মধ্য ও নিম্ন মেধার পড়ুয়ারা এই পাঠক্রমে বেশি করে আসছেন। তার বাইরে কারিগরি শিক্ষার দিকেও পা বাড়াচ্ছে একটা বড় অংশের পড়ুয়া। ফলে জেনারেল লাইনের পড়াশোনায় ভাটা পড়ছে।

পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ সূত্রে খবর, এ বার কলেজে স্নাতকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসন এখনও খালি। আসন খালি রয়েছে কোলাঘাট রবীন্দ্রভারতী মহাবিদ্যালয়ে। কলেজের অধ্যক্ষ তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কলেজে অনার্সের বিষয়গুলিতে ২০ শতাংশ করে আসন খালি রয়েছে। পাস কোর্সে আসন এর চেয়ে কিছুটা বেশি খালি রয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।’’ পাঁশকুড়ার সিদ্ধিনাথ মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষা উমা ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কলেজে সংরক্ষিত আসনগুলিতে এ বার ছাত্র পাওয়াই যায়নি। এখনও কলেজে বেশ কিছু আসন খালি।’’

কেন কলেজে ভর্তিতে আগ্রহ নেই? রুম্পা মান্না নামে পাঁশকুড়ার এক ছাত্রী বলেন, ‘‘জেনারেলে পড়ে চাকরি জোটে না। তাই নার্সিংয়ে ভর্তি হয়েছি।’’ কলেজে ছাত্র ভর্তি না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কর্মসংস্থান নীতিকেই দায়ী করেছে বিরোধী দল বিজেপি। বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য সিন্টু সেনাপতি বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার এসএসসি বন্ধ করে দিয়েছে। যা চাকরি হয়েছে, টাকার বিনিময়ে। তাই সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরা কলেজ থেকে মুখ সরিয়ে নিচ্ছে। রাজ্যে নতুন শিল্পও আসছে না।’’ যদিও জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অখিল গিরির দাবি, ‘‘এ সব অভিযোগ ঠিক নয়। কলেজগুলিতে ছাত্রভর্তির আসন পূরণ হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

higher studies SSC Vaccant seat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE