হঠাৎ গরুর ধুম জ্বর। খেতে অরুচি। তারপর খুড়ে পচন, জিভে সংক্রমণ। শেষমেশ মৃত্যুও।
সবং ব্লক জুড়ে গত দু’দিনে এমনই উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৫,৪০০টি গরু। শতাধিক গরু ও বাছুরের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। পশু চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই রোগ হল— ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ বা ‘এফএমডি’। ভেমুয়া, বিষ্ণুপুর, মোহাড়, বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় এই রোগ ছড়িয়েছে। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভেমুয়া পঞ্চায়েতের গোপালকেরা। বৃহস্পতিবার ব্লক প্রশাসনে বিষয়টি নথিভুক্ত হয়েছে।
গোটা ঘটনা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীকে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ মানস ভুঁইয়া। শুক্রবার জেলার প্রাণিসম্পদ দফতরের উপ-অধিকর্তা তুষারকান্তি সামন্তের নেতৃত্বে পশু চিকিৎসক ও কর্মীদের এতটি দল সবং ব্লকে গিয়েছিল। কলকাতা থেকে চার বিশেষজ্ঞও এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন।
পশুচিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে ভেমুয়া পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান ব্রজেন্দ্রনাথ মান্না। তিনি বলেন, “আমার এলাকায় বহু গরুর চিকিৎসা আমি করেছি। তবে সংক্রমণ ক্রমেই ছড়াচ্ছে।” দক্ষিণবাড়ের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মাইতিরও বক্তব্য, “আমাদের একটি গরু মারা গিয়েছে। সংক্রমণ ছড়ানোয় গ্রামের সকলে দিশাহারা।”
ইতিমধ্যে মোহাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুলিয়া, দুবরাজপুর, বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের উধ্ববপুর, রামভদ্রপুর, বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দাসপুর, লেজিভেড়ি, মগলানিচক, কুলভেড়িতে গরুর এই রোগ ছড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ব্লক প্রাণিসম্পদ বিভাগে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকায় এত বড় এলাকায় রোগ সামলাতে সমস্যা হচ্ছে। বিডিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানতে পারি। আসলে কয়েক সেকেন্ডে এই রোগ ছড়ায়। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা থেকে বিশেষ প্রতিনিধিদল এসেছে।” বিভিন্ন এলাকায় রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা প্রচার চলছে, হচ্ছে গরুর রোগ পরীক্ষা।
প্রাণিসম্পদ দফতরের জেলা উপ-অধিকর্তা তুষারকান্তি সামন্ত বলেন, "আমরা ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় এসেছি। গরুর মধ্যে এমন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যা প্রয়োজনীয় তা করা হচ্ছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘ আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy