Advertisement
E-Paper

‘দিদি’র ডাকে সভায় ‘দাদা’র বহু অনুগামী

তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে। তিনি মন্ত্রিত্বও ছেড়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৪৩
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অনুমানই সত্যি হল! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিম মেদিনীপুরের সভা মঞ্চে সোমবার দেখা গেল না অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্যকেই। বরং তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক বিধয়াককে এ দিন হাজির হয়েছেন মমতার সভায়।

তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে। তিনি মন্ত্রিত্বও ছেড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মমতার সমস্ত বিধায়কদের মেদিনীপুরের সভায় হাজির থাকার ডাকে যে তিনি যে সাড়া দেবেন না, সে কথা অজানা ছিল না রাজনৈতিক মহলে। তাঁরা বাবা তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীরও অসুস্থতার জন্য সভায় যেতে পারবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু রবিবারই অধিকারী পরিবারের আরেক সদস্য তথা তৃণমূলের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, তিনি মমতার সঙ্গে কোলাঘাটে দেখা করেছেন। যাবেন মেদিনীপুরের সভায়। সেই সভায় অবশ্য এ দিন তাঁকে দেখা যায়নি। কেন দেখা যায়নি, তা জানার জন্য তাঁকে একাধিক বার ফোন করা হয়। কিন্তু কোনও বারই তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি টেক্সট মেসেজেরও।

পূর্ব মেদিনীপুরের মোট ১৩ জন তৃণমূলের বিধায়ক (এর মধ্যে সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে বিধায়ক সমরেশ দাসের) রয়েছেন। এঁদের মধ্যে আট জন হাজির হয়েছিলেন মমতার সভায়। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল, ময়নার বিধায়ক সগ্রাম দলুইও সভায় ছিলেন। রণজিতের বক্তব্য, ‘‘দলের পক্ষ থেকে মেদিনীপুরে সভায় যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তাই আমি দলনেত্রীর সভায় গিয়েছিলাম। আমি কেমন আছি, মুখ্যমন্ত্রী তা খোঁজ নিয়েছেন।’’ আর সংগ্রামের কথায়, ‘‘যেতে বলা হয়েছিল, তাই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছিলাম। এলাকার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশও উৎসাহী হয়ে সভায় গিয়েছিলেন।’’

রণজিৎ এবং সংগ্রামের সভায় গেলেও এ দিন মমতার ডাকে সাড়া দেননি পূর্বের শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ আরেক বিধায়ক (উত্তর কাঁথি) বনশ্রী মাইতি। কেন তিনি যাননি, তা জানতে ফোন করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। শুভেন্দু, বনশ্রী বাদে অন্য যে দুই বিধায়ক সভায় যাননি, তাঁরা হলেন পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর এবং মহিষাদলের বিধায়ক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার। যদিও শারীরিক অসুস্থতার জন্য সভায় যেতে পারেননি বলে তাঁরা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।

বিধায়কেরা ছাড়াও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল সভাপতি শরৎ মেট্যা, ময়নার ব্লক সভাপতি সুব্রত মালাকার এবং শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নন্দকুমারের ব্লক সভাপতি সুকুমার বেরাও এ দিন মমতার সভায় গিয়েছিলেন। এই সুকুমারকেও সভাপতি পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ব্লক সভাপতি হিসাবে আমি মেদিনীপুরে দলনেত্রীর সভায় গিয়েছিলাম। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।’’ জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন পূ্র্ব মেদিনীপুর থেকে কয়েক হাজার জন তৃণমূলের নেতা, কর্মী, সমর্থক মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, মমতা এ দিনর সভা থেকে জল মাপতে চেয়েছিলেন যে, পূর্বের কোন কোনও বিধায়ক তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু যে ভাবে রণজিতের মতো শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতা মমতার ডাকে সভায় হাজির হয়েছেন তাতে রাজনীতির অঙ্কে ফের জটিলতা দেখা গিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে বিজেপি’র তমলুক সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘জেলার তৃণমূলের বিধায়কদের মধ্যে এখন কে দিদির অনুগামী আর কে দাদার অনুগামী, তা বোঝা মুশকিল। জেলার তৃণমূল বিধায়করা নিজেরাই বিভ্রান্ত।’’

Mamata Banerjee Suvendu Adhikari TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy