Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Panchayat Election

আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক আগলে রাখার দায়িত্ব ভাগ 

তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু ও জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তের বিরোধ মেটানো জন্য বিরবাহাকে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা।

কলকাতা ফেরার আগে। বুধবার ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

কলকাতা ফেরার আগে। বুধবার ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

রঞ্জন পাল
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩৩
Share: Save:

সফরের একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে ‘রাজনৈতিক’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা মিলল। তৃণমূল সূত্রের খবর, আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক আগলে রাখার দায়িত্ব কয়েকজন নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিয়ে ঝাড়গ্রাম ছেড়েছেন নেত্রী।

সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে মঙ্গলবার বেলপাহাড়ির সভামঞ্চে চুপচাপ ছিলেন মমতা। দলের কোনও নেতা-নেত্রীকে ডেকে সে ভাবে কিছু বলেননি। এমনকি, মঙ্গলবার কোনও বৈঠক বা দলীয় আলোচনা করেননি। তবে বুধবার জেলা ছাড়ার আগে একেবারে শেষ মুহূর্তে আগে দুই মন্ত্রী ও জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুকে নিয়ে বৈঠক সেরেছেন মমতা। পরে জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল দত্তর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে যাতে কোনও আঁচ না লাগে সে জন্য মমতা বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলেছেন দুই প্রতি মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা ও জোৎস্না মান্ডিকে। ওই দুই মন্ত্রীকে আরও বেশি করে কর্মসূচি করতে বলেছেন মমতা। এলাকার ঘুরে ঘুরে মানুষ কী চাইছেন, তা ভাল করে দেখতে বলেছেন দুই প্রতিমন্ত্রীকে। পাশাপাশি মমতা জানিয়ে দেন, দলের মধ্যে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু ও জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তের বিরোধ মেটানো জন্য বিরবাহাকে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা। যদিও এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথাযথ পালন করব।’’ দুলাল ও উজ্জ্বল এই দুই নেতার কোন্দল মেটানোর জন্য কয়েকমাস আগে তৎকালীন তৃণমূলের মহাসচিব অধুনা জেলবন্দি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দুই নেতাকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। বিরোধ মিটিয়ে এসব ঝগড়া বন্ধ করে একসঙ্গে দুই নেতাকে দলের কর্মসূচি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পার্থ। কিন্তু সুরাহা কিছুই হয়নি। দুলাল আদিবাসী সংরক্ষিত নয়াগ্রামে তিন বারের বিধায়ক। গত বছর গোপীবল্লভপুর বিধানসভা আসনে টিকিটের দাবিদার ছিলেন উজ্জ্বল। কিন্তু দলের দীর্ঘদিনের কর্মী হয়েও তিনি কেবল জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ। দলের অন্যতম জেলা কো-অর্ডিনেটরের পদের দায়িত্ব সামলেছেন উজ্জ্বল। ‘উন্নয়নের ভাগাভাগি’ নিয়ে দুলালের সঙ্গে উজ্জ্বলের সম্পর্ক ধীরে ধীরে শীতল হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। কয়েক মাস আগে দুলাল আবার জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন। তারপর নয়াগ্রামে উজ্জ্বল ঘনিষ্ঠ শ্রীজীবসুন্দর দাসকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দুলাল ঘনিষ্ঠ রমেশ রাউতকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে। রমেশকে নিয়ে এলাকায় দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে। এ দিন টুরিস্ট কমপ্লেকস থেকে বেরোনোর আগে প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেবের কাছে মমতা জানতে চান, শরীর কেমন আছে? দুর্গেশ জানান, শরীর ভাল আছে। সূত্রের খবর, উজ্জ্বলের সামনে দুলালকে মমতা নির্দেশ দেন, উজ্জ্বলকে কাজে লাগাতে হবে। উজ্জ্বল গন্ডগোল করবে না। এ দিন উজ্জ্বল বলেন, ‘‘নেত্রী আমাদের অনুপ্রেরণা। তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা আমরা দায়বদ্ধতা।’’ দুলাল বলেন, ‘‘ভাল করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাজে আরও উৎসাহ দিয়েছেন। বিরবাহাকে কো-অর্ডিনেট করার কথা বলেছে।’’ তবে দুলাল আরও জানান, দিদির এই নির্দেশ মানেই পঞ্চায়েত ভোট আরও বেশি করে খাটতে বলছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election adivasi Vote Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE