Advertisement
১৭ মে ২০২৪

আত্মসমর্পণ মাওবাদী কমান্ডার ভীমের

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৯ সাল থেকে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল ভীম। মাওবাদী নেতা বিকাশ, আকাশের কাছে সে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়। শুরুতে জনসাধারণের কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিল।

মেদিনীপুরে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ও ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার অনুরাঞ্জন কিসপোত্তার কাছে আত্মসমর্পণ মাওবাদী কমান্ডার ভীমের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুরে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ও ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার অনুরাঞ্জন কিসপোত্তার কাছে আত্মসমর্পণ মাওবাদী কমান্ডার ভীমের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

আত্মসমর্পণ করল খুন-ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ-সহ ১১টি নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত মাওবাদী নেতা ভীম সরেন ওরফে কার্তিক। পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়ার চিলগোড়ার বাসিন্দা ভীম ঝাড়খণ্ডের গোরাবান্দার এরিয়া কমান্ডার ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে আসে ভীম। দফতরে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ এবং ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার অনুরাঞ্জন কিসপোত্তা। ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সে।

জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “ভীম আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল। দুই জেলার পুলিশই ওর আত্মসমর্পণ নিচ্ছি।” ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার অনুরাঞ্জন কিসপোত্তাও বলেন, “ভীম আত্মসমর্পণ করল। এটা ভাল দিক।” পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পরে ভীমের বক্তব্য, “এতদিন ভুল পথে পরিচালিত হয়েছি। এখন অতীত ভুলে নতুন জীবন শুরু করতে চাই।”

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৯ সাল থেকে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল ভীম। মাওবাদী নেতা বিকাশ, আকাশের কাছে সে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়। শুরুতে জনসাধারণের কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে মাওবাদীদের দলে নাম লেখায়। তার নামে ১১টি নাশকতার মামলা ঝুলছে। এরমধ্যে ৯টি পূর্ব সিংভূম জেলার। বাকি ২টি ঝাড়গ্রাম জেলার। ইউএপিএ ধারাতেও তার নামে মামলা রয়েছে।

ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “ভীম আত্মসমর্পণ করায় ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ঝাড়গ্রামের সীমানাবর্তী এলাকার নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত হয়ে গেল।” এ দিন সন্ধ্যায় থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে আসে ভীম। পরে ওই রাইফেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এর আগেও একে একে আত্মসমর্পণ করেছে অনেক মাওবাদী নেতা। পুলিশের এক সূত্রে খবর, ভীম পুলিশের লিঙ্কম্যানদের যেমন খুন করেছে, তেমনই পুলিশ ক্যাম্পে হামলাও করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই তাকে খুঁজছিল পুলিশ। মাস কয়েক আগেও ঝাড়খণ্ডে নাশকতা করেছে সে। এ দিন কয়েক রাউন্ড গুলিও জমা দেয় ভীম। পুলিশ সূত্রে খবর, ‘পুনর্বাসন প্যাকেজে’ যা রয়েছে তার সবই পাবে এই আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী। স্থায়ী আমানত, এককালীন অনুদান যেমন পাবে, তেমনই প্রতি মাসে আর্থিক সাহায্য পাবে সে। দুই জেলার পুলিশ আলোচনা করে পদক্ষেপ করবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম, মাওবাদীরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসুক। ভীম তাই চেয়েছে। ও আবেদন করে বলেছে, আমি ভাল হতে চাই। এ বার ভাল ভাবেই থাকব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE