E-Paper

প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছতে জোর ভ্রাম্যমাণ শিবিরে

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তার চেয়ে বেশিই ওই রকম শিবির হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, বিধানসভা ভোটের আগে ‘পিছিয়ে পড়া’ গ্রামের মানুষের অভাব-অভিযোগ দূর করতে চাইছে তৃণমূল সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪২
শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবির।

শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবির। —ফাইল চিত্র।

আজ, শুক্রবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। তার আয়োজনে দুই জেলাতেই প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়তি নজর দিচ্ছে প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রের দাবি, জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামে এ বার বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। এই গ্রামগুলিতে ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে গ্রাম রয়েছে ৪,৯১৪টি। প্রশাসন সূত্রে খবর, এরমধ্যে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রাম ১,৩১৬টি। প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, এই সংখ্যক গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি বাসিন্দা জনজাতিভুক্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘শিবির আয়োজনের প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’

প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বুধবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন জেলাশাসক। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের এ বার নবম পর্ব। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার শিবির হওয়ার কথা ৬,০৫৯টি। প্রশাসন সূত্রে খবর, এরমধ্যে প্রচলিত (কনভেনশনাল) ৩,৩৯৯টি, ভ্রাম্যমাণ (মোবাইল) ২,৬৬০টি। একাংশ শিবির চত্বরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির, বাল্যবিবাহ রোধ, পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচিরও ব্যবস্থা থাকছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ রোধ, পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হবে। এ জন্য কিছু কিছু জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকার জন্য ‘মোবাইল শিবিরে’র ব্যবস্থা থাকছে।’’

নবান্নের নির্দেশ রয়েছে, মোট ৩০ শতাংশ ভ্রাম্যমাণ (মোবাইল) শিবির করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তার চেয়ে বেশিই ওই রকম শিবির হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, বিধানসভা ভোটের আগে ‘পিছিয়ে পড়া’ গ্রামের মানুষের অভাব-অভিযোগ দূর করতে চাইছে তৃণমূল সরকার।

বস্তুত, ইদানীং একাধিক প্রশাসনিক সভা থেকে প্রশাসনিক আধিকারিক এবং স্থানীয় প্রশাসনগুলির উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার প্রত্যেক পঞ্চায়েতে অন্তত দু’-তিনটি শিবির হবে। সেই মতোই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিবিরে যে সব আবেদন জমা পড়বে, সেগুলির ‘প্রসেসিং’ হয়ে যাবে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

ঝাড়গ্রাম জেলার ক্ষেত্রে লোধা-শবর অধ্যুষিত এলাকায় বেশি জোর দিতে চাইছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এই জেলায় অষ্টম পর্বের দুয়ারে সরকার শিবিরে ভ্রাম্যমাণ শিবিরের সংখ্যা ছিল ৪৭০টি। এ বার সেখানে ৯২৩টি ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রায় ২০ হাজার লোধা-শবর মানুষের বসবাস। ঝাড়গ্রাম, জামবনি, লালগড় ও নয়াগ্রাম ব্লকে লোধা-শবরের বসবাস বেশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার দুয়ারে সরকারের সবচেয়ে বেশি ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে লালগড় ব্লকে। সেখানে ২৫৮টি ভ্রাম্যমাণ শিবির ও ১০টি স্থায়ী শিবির হবে। সাঁকরাইল ব্লকে ১৬৮টি, ঝাড়গ্রাম ব্লকে ১৫৫টি, নয়াগ্রাম ব্লকে ১০৬টি, জামবনি ব্লকে ১০১টি ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। ঝাড়গ্রাম পুরসভার মোট ১৮টি ওয়ার্ডে ১৬টি স্থায়ী শিবির হলেও এখানে অবশ্য কোনও ভ্রাম্যমাণ শিবির নেই। জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘লোধা-শবর অধ্যুষিত এলাকা ও জঙ্গলঘেরা প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকার হাতি থাকার জন্য দুয়ারে সরকার শিবিরে অসুবিধা এড়াতে বন দফতরকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘বার্ধক্য ভাতার ক্ষেত্রে সরকারি কোটা রয়েছে। সরকার যেভাবে কোটা ছাড়ে, সেভাবে ভাতা দেওয়া হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy