Advertisement
E-Paper

চিঠি পড়েই, এ বার শুরু ‘দিদিকে বলো’  

এ সব সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় বিলি হবে তো? প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০০:১০
‘দিদিকে বলো’র পোস্টার। —ফাইল চিত্র

‘দিদিকে বলো’র পোস্টার। —ফাইল চিত্র

দিদির পাঠানো আগের চিঠিই বিলি হয়নি এখনও। তার মধ্যেই ‘দিদিকে বলো’ নিয়ে সাজো সাজো রব জেলা তৃণমূলে।

এই কর্মসূচি চালু হওয়ার প্রথম ২৪ ঘণ্টায় এক লক্ষেরও বেশি ফোন এসেছে দিদির দরবারে— এমনই দাবি করেছে ‘দিদিকে বলো’ শীর্ষক টুইটার হ্যান্ডল। শুধু ফোন নম্বর বা ওয়েবসাইট তৈরি করে সরাসরি অভিযোগ নেওয়াই নয়, রাস্তায় নেমে জনসংযোগের প্রস্তুতিও পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। একেবারে কর্পোরেট ধাঁচে জনসংযোগের এই কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও পৌঁছেছে ভিজিটিং কার্ড, স্টিকার, টি- শার্ট- সহ আরও কিছু প্রচার সরঞ্জাম। এগুলি গ্রামে গ্রামে বিলি করার কথা। গ্রামে গিয়ে রাত কাটানোর জন্য দলের বিধায়ক, নেতাদের কাছে ‘ভিলেজ ভিজিট কিটস’ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এ সব সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় বিলি হবে তো? প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরেই। কারণ, মাস দেড়েক আগে বাড়ি বাড়ি বিলির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা সম্বলিত প্রায় ৫০ হাজার চিঠি জেলায় এসেছিল। চিঠিতে দিদির সইও রয়েছে। তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার চিঠি না কি এখনও বিলিই করা যায়নি। কয়েক হাজার করে চিঠি এখনও শহর, ব্লকের দলীয় কার্যালয়গুলিতে পড়ে রয়েছে। চিঠির উপর এখন ধুলো জমছে। দলনেত্রীর পাঠানো সব চিঠি কেন এখনও বিলি করা গেল না? কর্মীর অভাব? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘নেত্রীর চিঠি আমরা শহরে, ব্লকে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। শহরে, ব্লকে তা বিলি হয়েছে বলেও শুনেছি। এ ব্যাপারে ফের খোঁজখবর নিচ্ছি।’’ দলনেত্রীর পাঠানো সব চিঠি যে বিলি হয়নি তা জেলার বিধায়কদের একাংশও মানছেন। জেলার এক তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘আমি হাজার সাতেক চিঠি পেয়েছিলাম। হাজার চারেক বিলি করেছি। গতকালই শুনলাম, দলের কার্যালয়ে না কি কিছু চিঠি এখনও রয়েছে। নেত্রীর চিঠি এ ভাবে পড়ে থাকার কথা নয়। এক- দু’দিনের মধ্যেই সব বিলি করে দেবো।’’

দলেরই এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, লোকসভা ভোটে হারের পরে দলের কর্মী- সমর্থকদের মনোবল ফেরাতে এই চিঠি- কৌশল অবলম্বন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার নিরিখে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৫টি বিধানসভার মধ্যে ৭টিতেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। ভোটের পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে বিজেপির প্রভাব বাড়ছে দ্রুত। এই পরিস্থিতিতে চিঠির মাধ্যমে বার্তা দিয়েছিলেন দলনেত্রী। চিঠিতে মমতা লিখেছিলেন, ‘আঁধার আগেও এসেছে, চক্রান্ত আগেও হয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রমাণ করেছি পরাজয় মানে মৃত্যু নয়। বরং আরও উৎসাহ ও ঐক্যবদ্ধ শক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে নতুন করে লড়াই। বাংলাকে এত সহজে হারানো যায় না।’ এই চিঠিই যখন সব বিলি হয়নি তখন নতুন করে আসা ‘দিদিকে বলো’র প্রচার সরঞ্জাম সময় মতো বিলি হবে কি না সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরেই। মেদিনীপুরের এক তৃণমূল কর্মীর আপেক্ষ, ‘‘কোনও নেতা যদি মনে করেন বিলি না করে সব নিজের কাছে রেখে দেবেন, তো কী আর করা যাবে! সুযোগ পেলে দিদিকে বলব!’’ তৃণমূলের এক জেলা নেতার স্বীকারোক্তি, ‘‘নিশ্চয়ই কর্মীর অভাব দেখা দিয়েছে। না- হলে তো এমনটা হওয়ার কথা নয়।’’

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী নিজে। তাই এই কর্মসূচিতে যাতে কোনও রকম গাফিলতি না হয় সে ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক জেলা তৃণমূলও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত জানাচ্ছেন, ‘দিদিকে বলো’ লেখা ভিজিটিং কার্ড, মোবাইল স্টিকার, টি-শার্ট গ্রামে গ্রামে বিতরণ করতে হবে। এটাই দলের নির্দেশ।

দলনেত্রীর চিঠি বিলি না হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপির সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘শুনেছি ওই চিঠিতে দিদি না কি লিখেছেন, ‘পরাজিত হয়েছি, কিন্তু হারিনি’। দিদির ভাইয়েরা হয়তো এখনও এর মানে ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেননি। তাই হয়তো চিঠিগুলি বিলি করেননি!’’

Midnapore TMC Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy