শীত পড়তেই ঘাটালে এল পরিযায়ী পাখির দল। বছর চারেক ধরে ঘাটাল শহর সংলগ্ন হরিসিংহপুর পার্কের ঝিলে আসছে ওই পাখির দল। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শীতের ওই অতিথিদের দেখা মেলায় খুশি ঘাটালের বাসিন্দারা। ঝিলটিকে সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতরও। দফতরের ডিএফও (খড়্গপুর) অঞ্জন গুহ বলেন, “জেলার মধ্যে একমাত্র ঘাটালের ওই ঝিলেই পরপর চার বছর আসছে পরিযায়ী পাখির দল। সাঁতরাগাছির ঝিলের মতোই যাতে ঘাটালের ঝিলটিও যাতে ভিন দেশের পাখিদের স্থায়ী ঠিকানা হয়-তার চিন্তাভাবনা নেওয়া হচ্ছে।”
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বছর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঘাটাল ছাড়তে শুরু করেছিল পরিযায়ী পাখির দল। কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল ঝিল সংলগ্ন এলাকায় সরকারি পলিটেকনিক কলেজের বাড়ি তৈরি। শান্ত ওই ঝিলের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও বন দফতর পক্ষীপ্রেমীদের এই আশঙ্কা উড়িয়ে দাবি করেছিল, “আবহাওয়ার কারণে পাখির দল তাদের গন্তব্যে রওনা দিয়েছে।’’ প্রথম বছর ২৫০-৩০০ টি পাখি এসেছিল। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে পাখির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত বছরই প্রায় ২০০০টি পাখি এসেছিল। এ বার ইতিমধ্যেই শ’পাঁচেক পাখি এসে গিয়েছে। অঞ্জনবাবু বলেন, “মূলত ডিসেম্বর মাসের গোড়াতেই আসতে শুরু করে পাখি। আশা করছি এবার সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়ে যাবে।”
বন দফতর সূত্রে খবর, মূলত ঠান্ডা দেশেই এই সব পাখির বাস। ঘাটালের ওই পার্কের ঝিলে যে পাখি আসছে তারা সরাল প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। এরা দেখতে ছোট ছোট হাঁসের মতো। গায়ের রঙ ধূসর-বাদামি। ঠোঁট কিন্তু দেশীয় হাঁসের মতো। এরা সাধারণত জল-জঙ্গল ঘেঁষা প্রকৃতিতে থাকতে ভালোবাসে। আফগানিস্থান, পাকিস্থান এবং দক্ষিণ চীনেই এই পাখির বাস। পাখিগুলি নিরামিষাশী। ইতিমধ্যে পাখি দেখতে ঝিলে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ছবিও তুলছেন পক্ষীপ্রেমীরা।