Advertisement
০২ মে ২০২৪
West Bengal Budget 2024-25

পরিকাঠামোয় বরাদ্দ কই

শুধুমাত্র সরকারি ভাতায় তাঁদের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটবে, সে কথা মানতে রাজি নন মৎস্যজীবীরা। তাঁরা ভাতার পাশাপাশি, জেলার মৎস্য বন্দর এবং অন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি করছেন।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:১২
Share: Save:

মৎস্যজীবীদের জন্য ‘সমুদ্র সাথী’ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। যে দু’মাসে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া যায় না, সেই সময়ে মৎস্যজীবী পিছু মাসিক পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে ওই প্রকল্পে। এতে সাময়িক ভাবে মৎস্যজীবীরা খুশি হলেও তাঁদের মনে উঠছে নানা প্রশ্ন। পাশাপাশি, ভাতা ছাড়া মৎস্যজীবীদের সার্বিক উন্নয়নে সমস্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি করেছেন তাঁরা।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৩২ জন মৎস্যজীবী হিসাবে পরিচয় পত্র পেয়েছেন। শুধু পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান ৫০ হাজার জন। এছাড়া, নোনা জলে ১৪ হাজার এবং মিষ্টি জলে মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত ‘ব্যান পিরিয়ড’ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। মৎস্যজীবীদের রয়েছে পরিচয় পত্রও। তবে সেই সরকারি ভাতা কারা পাবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে মৎস্যজীবী মহলে।

অভিযোগ, শাসকদলের পক্ষপাতিত্বের রাজনীতিতে অনেক ভুয়ো মৎস্যজীবী ওই পরিচয় পত্র পেয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলছেন, ‘‘অনেকে মৎস্যজীবী না হলেও নাম নথিভুক্ত করে পরিচয় পত্র পেয়েছেন। তাঁরাও সরকারি ভাতা দাবি করবেন। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। আর প্রকৃত মৎস্যজীবীরা হতাশ হবেন। তাই মৎস্যজীবীদের প্রকৃত পরিচয় যাচাই করে দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যাতে নির্দেশ দেন, সে বিষয়ে চিঠি দিয়েছি।’’

শুধুমাত্র সরকারি ভাতায় তাঁদের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটবে, সে কথা মানতে রাজি নন মৎস্যজীবীরা। তাঁরা ভাতার পাশাপাশি, জেলার মৎস্য বন্দর এবং অন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি করছেন। এশিয়ার বৃহত্তম মৎস্য বন্দর পেটুয়াঘাট ধুঁকছে। ২০২০ সালে আমপানে তছনছ হয়ে গিয়েছে বন্দরের মাছ নিলাম কেন্দ্র। তারপর বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছ নিলাম প্রক্রিয়া। সংশ্লিষ্ট বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অরিন্দম সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘বন্দর পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। যা কিছু খারাপ হয়েছিল, সব সংস্কার চলছে।’’

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আধুনিকীকরণের অভাবে জর্জরিত শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর। রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ মাছ নিলাম কেন্দ্র রয়েছে দিঘা মোহনাতে। রাজ্যের উদ্যোগে সেখানে তৈরি হচ্ছে আধুনিক মানের মাছ নিলাম কেন্দ্র। সেই কাজ ধীরে চলছে বলে দাবি। প্রথম পর্যায়ে ওি কাজে ছ'কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল সরকার। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি বলে খবর। দিঘা মোহনা এবং শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরে ঢোকার মুখে যে খাল রয়েছে, তা দীর্ঘদিন ড্রেজিং হয়নি। দিঘা ফিসারমেন অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাশোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলছেন, ‘‘১১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কাজ শুরু হয়নি।’’

রাজ্য মৎস্যজীবীদের প্রকৃত উন্নয়ন চায় না বলে অভিযোগ বিজেপির। দলের জেলা (কাঁথি) সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘আসল উন্নয়নের কথা ভাবলে রাজ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিত।’’ তবে জেলার বাসিন্দা তথা মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রকৃত মৎস্যজীবীরা যাতে সহায়তা পান, সে জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Budget 2024-25 Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE