Advertisement
E-Paper

পুলিশ হতে চাই, ডিএম দিদিমণিকে জানাল পড়ুয়ারা

চক-ডাস্টার হাতে তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি ক্লাসে নতুন দিদিমণি। ব্ল্যাক বোর্ডে ‘অ্যাকোয়াটিক’ শব্দ লিখে ৩৪ জন পড়ুয়ার সামনেই প্রশ্ন, ‘‘এর মানে কী?’’ উত্তর এল ‘জলজ’।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪৩
ইংরেজির পাঠ় জেলাশাসক রশ্মি কমলের। —নিজস্ব চিত্র।

ইংরেজির পাঠ় জেলাশাসক রশ্মি কমলের। —নিজস্ব চিত্র।

চক-ডাস্টার হাতে তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি ক্লাসে নতুন দিদিমণি। ব্ল্যাক বোর্ডে ‘অ্যাকোয়াটিক’ শব্দ লিখে ৩৪ জন পড়ুয়ার সামনেই প্রশ্ন, ‘‘এর মানে কী?’’ উত্তর এল ‘জলজ’।

পরীক্ষায় কী হতে চাও রচনা নতুন নয়। নতুন দিদিমণি সেই প্রশ্নও করলেন পড়ুয়াদের। কেউ জানাল, চিকিৎসক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা শিক্ষক। কিন্তু অধিকাংশ পড়ুয়ার উত্তর, তারা পুলিশ হতে চায়। কিছুটা অবাক নতুন দিদিমণির পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এতজন পুলিশ হতে চাও কেন ? তোমাদের এলাকায় কি খুব চুরি-ডাকাতি হয়?’’ হেসে প়ড়ুয়াদের জবাব, ‘‘পুলিশ হতে চাই দেশ রক্ষা করার জন্য। চোরও ধরব।’’

এ বার হেসে ফেললেন নতুন দিদিমণি ওরফে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলও।

জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনার মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্থির হয়েছে, প্রশাসন, পুলিশ-সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে মাসে একদিন পড়ুয়াদের ক্লাস নেবেন। শুনবেন স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথাও। জেলা প্রশাসনের তরফে এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দীক্ষা’। জেলা প্রশাসনের সূচি অনুযায়ী সোমবারই ছিল সেই প্রথম দিন। জেলার ১৫১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে যান জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ জেলা প্রশাসন ও দফতরের আধিকারিকরা।

দুপুর ১২ টা নাগাদ তমলুকের খোসখানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান জেলাশাসক রশ্মি কমল ও জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। ৩১২ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে এ দিন ওই স্কুলে হাজির ছিল ২৯০ জন। জেলাশাসক এ দিন তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের ইংরেজি পড়ান। আর পড়ার ফাঁকে জানতে চান কী হতে চান পড়ুয়ারা। তখনই সামনে আসে খুদেদের আইনের রক্ষক হওয়ার এমন বাসনা।

জেলাশসক যখন পড়ুয়াদের এমন ইচ্ছের কথা শুনছেন তখন ঠিক তার পাশের ক্লাসে অঙ্ক শেখাচ্ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। খাকি পোশাক পরিহিত ওই পুলিশ অফিসার এ দিন টাকার বিনিময় গুরত্ব বোঝাতে গিয়ে একটি দশ টাকার নোট ছিঁড়ে দেখান। পুলিশ সুপারের অঙ্ক শেখানো ভাল লেগেছে বলে জানায় পড়ুয়ারা। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া অন্বেষা ভৌমিক, প্রিয়ঙ্কা ভৌমিকের কথায়, ‘‘ এরকম প্রায় হয় না কেন? স্যারের পড়ানো খুব ভাল লেগেছে।’’

ক্লাস নিতে এসে স্কুলের রান্নাঘরে গিয়ে মিড-ডে মিলের খোঁজ নিয়েছেন জেলাশাসক। এ দিনের মেনু ছিল ডিমের ঝোল-ভাত। জেলাশাসককে কাছে পেয়ে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আর্জি জানাতে ভোলেননি। আরও তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকা, স্কুলের ক্যাম্পাসে চিলড্রেন পার্ক আর স্কুলের কাছে রাস্তা পাকা জানিয়ে দিয়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা গীতা সামন্ত বলেন, ‘‘জেলাশাসক নিজে ক্লাস নিতে আসায় আমরা খুশি। আর স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এত কাছ থেকে আগে জানানোর সুযোগ হয়নি।’’

Police officer School student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy