Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mentally Challenged

Children: জল-আগুনের ফারাক বোঝে না ছেলেমেয়ে, তাই দুই শিশুকে শিকলে বেঁধে রাখেন মা

দাসপুরের হরিরামপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ রায় এবং সোমার দুই সন্তান। দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। তাদের শিকলে বেঁধে রাখেন সোমা।

তখন শিকলে বাঁধা কৌশিক।

তখন শিকলে বাঁধা কৌশিক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাসপুর শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:১৮
Share: Save:

মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে এবং মেয়ে। জল এবং আগুনের ফারাক বোঝে না কেউ। তাই বুকে পাথর চেপে রেখে দুই শিশুকে শিকলে বেঁধে রাখেন মা। রোজ এই ঘটনার সাক্ষী হন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার হরিরামপুরের বাসিন্দারা।
হরিরামপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ রায় এবং সোমার দুই সন্তান। একটি ছেলে, একটি মেয়ে। কিন্তু তারা দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন বলে বাবা-মায়ের দাবি। ছেলের বয়স ৮ আর মেয়ের ১০ বছর। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই দুই শিশুর শৈশব বন্দি লোহার শিকলে। কষ্ট চেপে রেখেই দুই শিশুর মা সোমা বলছেন, ‘‘ওরা জলে পড়ে যায়। আগুনে পুড়ে যায়। আশপাশের কোনও শিশুকে ঠেলে ফেলে দেয়। তাই ছেলেকে শিকলে আটকে রাখি। মেয়েটাও সুস্থ নয়। চিকিৎসকদের দেখিয়েছি। তবে তাঁরা জবাব দিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘ওদের চিকিৎসা করে কথা বলানো সম্ভব নয়।’ আমরা ওদের নিয়ে তাই মন্দিরে মন্দিরে ঘুরছি।’’

পেশায় ভ্যানচালক অভিজিৎ। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন অবস্থা পরিবারের। সোমা বলছেন, ‘‘ছেলেটা কোনও সাহায্য পায় না। ও যাতে সাহায্য পায় তার জন্য কাগজপত্র জমা দেব। তবে মেয়েটা এক হাজার টাকা ভাতা পায়।’’ রায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় হরিনারায়ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক তাপস মাঝি যেমন বললেন, ‘‘একই পরিবারের ছেলে এবং মেয়ে দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। শিকলে বাঁধা। আমি দেখে মর্মাহত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ওরা যাতে সরকারি সাহায্য পায় সে জন্য সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। দেখা যায় কী হয়। ওদের শৈশব লুঠ হয়ে যাচ্ছে। এটা বসে বসে দেখা যায় না।’’

দুই শিশুকে বেঁধে রাখার খবর পেয়ে তৎপর প্রশাসন। এ নিয়ে দাসপুর এক নম্বর ব্লকের বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়েই প্রশাসনিক আধিকারিকদের ওই বাড়িতে পাঠিয়েছি। তা ছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীরাও গিয়েছেন ওই বাড়িতে। ওই পরিবারের একটি শিশু মানবিক প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। অন্য শিশুটিকেও মানবিক প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। শিশু দু’টিকে শিকলবন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য বাড়ির লোককে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE