Advertisement
E-Paper

সাংসদের অ্যাম্বুল্যান্সে অস্ত্র পাচার, নালিশ

ডাকাতির উদ্দেশ্যে তৃণমূল সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। পুলিশ ওই অ্যাম্বুল্যান্স-সহ ছ’জনকে গ্রেফতারও করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে কয়েকজন তৃণমূল নেতা তথা জনপ্রতিনিধিদের নাম। এ বার তৃণমূল সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্সে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ তুললেন মানস ভুঁইয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০১:০৩

ডাকাতির উদ্দেশ্যে তৃণমূল সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। পুলিশ ওই অ্যাম্বুল্যান্স-সহ ছ’জনকে গ্রেফতারও করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে কয়েকজন তৃণমূল নেতা তথা জনপ্রতিনিধিদের নাম। এ বার তৃণমূল সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্সে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ তুললেন মানস ভুঁইয়া।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ মার্চ রাতে পটাশপুর থানার ছোট উদয়পুর থেকে আটক করা হয় একটি গাড়ি এবং একটি অ্যাম্বুল্যান্স। গ্রেফতার করা হয় ভগবানপুর থানার মহম্মদপুর গ্রামের কনক মণ্ডল, কানাই দাস, সেকবাড় গ্রামের খোকন পাল ও মৃণাল সামন্ত এবং সবং থানার নিমকি মোহাড় গ্রামের বলরাম বেরা ও কৃষ্ণপ্রসাদ বেরাকে। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও দু’রাউন্ড গুলি, ভোজালি ও লোহার রড পাওয়া যায়। জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করে পটাশপুরের কালীরবাজারে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যেই বেরিয়েছিল তারা। ৯ মার্চ কাঁথি এসিজেএম আদালতের বিচারক ১৪ মার্চ তাদের ফের আদালতে তোলা হলে চোদ্দ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। কনক ও কানাইকে ছ’দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, আটক গাড়িটির মালিক নান্টু প্রধান। আর অ্যাম্বুল্যান্সটি সবং ব্লকের মোহাড় পঞ্চায়েতের। গায়ে লেখা রয়েছে ‘সাংসদ দীপক অধিকারীর সাংসদ তহবিলের অর্থানুকুল্যে’। গাড়ি দু’টি সম্পর্কে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার মানস ভুঁইয়া অভিযোগ করেন, “তৃণমূল সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স কাজে লাগিয়ে ভোটের আগে তৃণমূল অস্ত্র পাচার করছে। এলাকায় এলাকায় পোষা দুষ্কৃতী পাঠানোর কাজে ব্যবহার করছে। স্থানীয় মানুষ ধরে ফেলায় বাধ্য হয়ে ডাকাতির লঘু মামলা করে ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ।” তাঁর দাবি, ভোটে নিশ্চিত পরাজয় বুঝে সন্ত্রাস করে ভোটে জিততে এলাকায় অস্ত্র ঢোকাচ্ছিল তৃণমূল। কাঁথির সাংসদ তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, “আমি জানি না। উনি পুলিশকে বলুন।”

এগরার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় সরকার বলেন, “একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও একটি গাড়িতে করে দুষ্কৃতীরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে। ছ’জনকে গ্রেফতার করা গেলেও বাকিরা পলাতক।” পুলিশের দাবি, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হিসাবে নান্টু প্রধান ও তার ভাই পিন্টু প্রধান-সহ বেশ কিছু নাম পাওয়া গিয়েছে।

নান্টু তৃণমূলের মহম্মদপুর-১ অঞ্চল সভাপতি এবং ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। তাঁর স্ত্রী অপর্ণা প্রধান পঞ্চায়েত প্রধান। পিন্টু ভগবানপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। তাঁর শাশুড়িও আবার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা। নান্টুর বাবা চাঁদহরি প্রধান ওই পঞ্চায়েতে গত দু’বার প্রধান ছিলেন। ২০১৩ সালেও উপপ্রধান হন। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করায় উপ-নির্বাচনে জিতে উপপ্রধান হন নান্টু। গত ২ মার্চ ভগবানপুর ১ ব্লকে স্মারকলিপি দিতে এসে নান্টুর নেতৃত্বে প্রশাসনিক কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। প্রহৃত হন বিডিও-সহ সরকারি কর্মীরা। সেই ঘটনায় নান্টুর বিরুদ্ধে সরাসরি এফআইআর করেন বিডিও। পুলিশও তাদের গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশ পেটানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা রুজু করে।

তারপর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন নান্টু ও তাঁর ভাই-সহ বাহিনীর কয়েকজন। নান্টুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রেও জানা গিয়েছে, ওই গাড়িতে করেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন নান্টুরা। ঘটনার দিন তাঁরা ওই ছোট উদয়পুর গ্রামে একজনের আশ্রয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু রাতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের দেখে সন্দেহ করে তাড়া করে। নান্টু ও পিন্টু কোনোওক্রমে পালিয়ে যান। অন্যদের ধরার পর ধৃতদের টোপ দিয়ে নান্টুকে ডেকে পাঠানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু নান্টু নিজে না এসে সঙ্গীদের উদ্ধার করার জন্য মোহাড়ের ওই অ্যাম্বুল্যান্স পাঠায়। সেটিকেও আটক করে পুলিশ।

ভগবানপুর থানা সূত্রে খবর, ধৃত ভগবানপুর থানার ওই চারজনের বিরুদ্ধে এলাকায় তোলাবাজি, হুমকি, রাজনৈতিক শাসানি-ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ বিস্তর। মূলত এরা নান্টুর লোক। তবে অতীতে ডাকাতির কোনোও অভিযোগ ছিল না।

arms trafficking ambulance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy