Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
kharagpur municipality

নতুন বছরে এখনও বেতনহীন কর্মীরা

দিন পনেরো ধরে আর্থিক অচলাবস্থা অব্যাহত। নতুন বছরের শুরুতে পুরসভার স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীদের মুখে এখন শুধুই হাহাকার!

খড়গপুর পৌরসভা।

খড়গপুর পৌরসভা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৮
Share: Save:

তৃণমূলের ‘চাপে’ বিনা বোর্ড মিটিংয়ে ইস্তাফাপত্র জমা দিয়েছেন পুরপ্রধান। সেই ইস্তফা আইনসিদ্ধ কি না সেই প্রশ্নে চুপ প্রশাসনও। আশা ছিল নজরুল মঞ্চের সভার পরে নতুন পুরপ্রধানের নাম ঘোষণা করবে তৃণমূল। আশাহত হয়েছেন কাউন্সিলররা। নিয়মের বেড়াজালে পুরপ্রধানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পাননি উপ-পুরপ্রধানও। দিন পনেরো ধরে আর্থিক অচলাবস্থা অব্যাহত। নতুন বছরের শুরুতে পুরসভার স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীদের মুখে এখন শুধুই হাহাকার!

খড়্গপুর পুরসভায় নতুন বছরের প্রথম মাসের তৃতীয় দিনেও বেতন থেকে বঞ্চিত থাকতে হল পুরকর্মীদের। স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি পুরসভার অর্থ বিভাগ। কবে পুরকর্মীরা বেতন পাবেন তার সদুত্তরও মিলছে না। মূলত পুরপ্রধান না থাকায় ‘ডিজিট্যাল সিগনেচার সার্টিফিকেট’(ডিএসসি) ট্রেজারিতে জমা করতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ। এমনকি সেই দায়িত্ব পাননি উপ-পুরপ্রধানও। নিয়ম অনুযায়ী, পুরপ্রধানের পদত্যাগ করলে উপ-পুরপ্রধানকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রয়োজনে দেওয়া হয় পুরপ্রধানের ডিএসসি। কিন্তু মহকুমাশাসকের কাছে খড়্গপুরের পুরপ্রধানের পদ থেকে প্রদীপ সরকারের জমা দেওয়া ইস্তফাপত্র আইনসিদ্ধ কি না সেই প্রশ্নে জল্পনা চলছে। ২ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের সভার পরে ওই দিনই নতুন পুরপ্রধানের নাম তৃণমূলের তরফ থেকে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করেছিলেন কাউন্সিলরদের একাংশ। তবে নতুন পুরপ্রধানের নাম মঙ্গলবার পর্যন্ত জানাতে পারেনি তৃণমূল। মুখে কুলুপ এঁটেছে পুরসভার অর্থ বিষয়ক দফতর।

তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “আমি বলেছিলাম ২জানুয়ারির পরে নাম ঘোষণা করবে দল। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে দল নাম জানাবে।” কিন্তু পুরকর্মীদের বেতনের প্রশ্ন অজিতের জবাব, “উপ-পুরপ্রধান তো আপাতত পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন।” যদিও এ দিন উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খান বলেন, “আমরা জানি পুরপ্রধান না থাকলে উপ-পুরপ্রধান দায়িত্ব নেয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ডিএসসি ব্যবহারের ক্ষমতা আমাকে লিখিতভাবে দেওয়া হয়নি। ডিএসসি ছাড়া তো কর্মীদের বেতন সম্ভব নয়!”

তবে কি বোর্ডের মিটিং ডেকে সেখানেই পুরপ্রধানের দায়িত্ব উপ-পুরপ্রধানকে দিয়ে ডিএসসি হস্তান্তর করা হতে পারে! এ প্রশ্নেও জটিলতা রয়েছে। কারণ পুর আধিকারিকদের একাংশের দাবি, পুরপ্রধানের পদত্যাগ পুরআইন অনুযায়ী বোর্ডের বৈঠক ডেকে কাউন্সিলরদের দারা গৃহীত হয়নি। সেই প্রক্রিয়ায় এগোলে পুরআইনের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপ-পুরপ্রধান স্বাভাবিক নিয়মে পুরপ্রধানের দায়িত্ব পেয়ে যান। কিন্তু যেখানে পুরপ্রধানের পদত্যাগে পুর আইন মানা হয়নি সেখানে উপ-পুরপধানের দায়িত্বভার নেওয়ার ক্ষেত্রে কী ভাবে সেই আইন মানা হবে তা নিয়ে জট বেঁধেছে। আবার আইনের বাইরে বেরিয়ে উপ-পুরপ্রধানকে ডিএসসি-এর দায়িত্ব হস্তান্তর কতটা বৈধ হবে তা নিয়েও প্রশ্ন ঘুরছে। অথচ জেলা প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে পুর আধিকারিকদের কাছে মৌখিকভাবে আসছে নানা চাপ। কিন্তু মৌখিক নির্দেশ পালনে বিপাকে পড়েছে পুর আধিকারিকেরা। পুরসভার এই আর্থিক অচলাবস্থা ও কর্মীদের বেতন সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার তুলিকা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বেতনের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে আলোচনা চালাচ্ছি। তবে আমি এখনও কোনও লিখিত নির্দেশ পাইনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kharagpur municipality Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE