ঘটনাস্থলে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় দাপুটে তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। স্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্যা। পাঁশকুড়ার কেশাপাট এলাকার সেই তৃণমূল কর্মী অনুপ মণ্ডলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল শনিবার। শুক্রবার গভীর রাতে তাঁকে মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সুশান্ত চক্রবর্তী নামে ওই অভিযুক্ত রাতেই পাঁশকুড়া থানায় আত্মসমপর্ণ করেছে।
কেশাপাট পঞ্চায়েত এলাকার পাকুড়িয়ার বাসিন্দা অনুপের স্ত্রী অসীমা আড়িষান্ডা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। তিনি কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্যাও। অনুপ নিজে পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কেশাপাট বাজারে তাঁর একটিও দোকান রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন অনুপ। সে সময় কেশাপাট বাজারের কাছে রাস্তার উপরে কয়েকজন ফুল ব্যবসায়ী ফুলের গাঁট সাজাচ্ছিলেন। রাস্তা দখল করে ফুল গোছানোর অনুপ প্রতিবাদ করেন। সে নিয়ে হাতিশাল গ্রামের ফুল ব্যবসায়ী রঘুনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে অনুপের জোর বচসা হয়। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন রঘুনাথ তাঁর ছেলে সুশান্তকে ফোন করে বিষয়টি জানান। বচসা শেষে অনুপ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। তবে অনুপ বাড়ি ঢোকার কিছুক্ষণ আগে থেকেই সুশান্ত একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে তাঁর বাড়ির অদূরে রাস্তার ধারে অপেক্ষা করছিল। অনুপ সে জায়গায় পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে সুশান্ত তাঁর উপরে চড়াও হয় বলে দাবি। এবং লাঠি দিয়ে সুশান্ত অনুপের মাথায় আঘাত করে।
ঘটনার পর সটান পাঁশকুড়া থানায় হাজির হয় সুশান্ত। পুলিশকে সমস্ত বিষয় খুলে বলে সে। পাঁশকুড়া থানার এক আধিকারিক জানান, সুশান্ত চক্রবর্তী নামে এক যুবক শুক্রবার রাতে থানায় আত্মসমর্পণ করে খুনের কথা কবুল করে। ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।অভিযুক্তের বাবা পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। এ দিকে, অনুপের বাড়ির লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। অনুপের দাদা রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘‘রাস্তায় ফুলের বোঝা রাখা নিয়ে আমার ভাইয়ের সঙ্গে ফুল ব্যবসায়ী রঘুনাথ চক্রবর্তীর বচসা হয়েছিল। রঘুনাথের ছেলে সুশান্ত অনুপকে খুন করে চলে যায়। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসাবে অনুপের এলাকায় যথেষ্ট দাপটও ছিল। তবে অনুপের খুনের ঘটনায় কোনও রাজনীতি নেই বলে দাবি তৃণমূল এবং বিরোধী শিবিরের। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘রাস্তার উপর ফুল রাখা নিয়ে বচসা। সেই থেকে খুন। অনুপ মণ্ডল আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। অভিযুক্ত ও তার পরিবারের লোকজনের আচরণ ভাল নয়। গ্রামের অন্যদের সঙ্গেও নানা বিবাদ রয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy