সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ কয়েক বছর প্রেম করছিলেন সদ্য কৈশোর পেরোনো যুগল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এই সম্পর্ক মেনেও নিয়েছিল দুই পরিবার। সম্প্রতি মেয়েটির ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় বাড়িতে তাঁর বিয়ের প্রস্তুতিও চলছিল জোর কদমে। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন ঘটল যুগলের মধ্যে ঘটে যাওয়া অন্তর্কলহের জেরে। বুধবার সকালে নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন যুবক, আর সেই খবর পেয়ে বিকেলে নিজেকে শেষ করে দিল ওই কিশোরী। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে মৃতদেহগুলি তুলে দেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় কোনও পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবক বিশ্বজিৎ দাস (২১) পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার বামনপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত কিশোরী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী গায়ত্রী বর্মণ (১৮) নন্দকুমার থানার চুনাখালি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিশ্বজিতের সঙ্গে বছর কয়েক আগে সমাজমাধ্যমে পরিচয় হয় গায়ত্রীর। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং সেখান থেকেই প্রেম। দুই পরিবারে ঘটনাটি জানাজানি হলে তারা বিষয়টি মেনেও নেয়। বর্তমানে বিশ্বজিৎ ভিন্রাজ্যে ফুলের কারিগর হিসাবে কাজ করতেন। মেয়ের বয়স সম্প্রতি ১৮ বছর হওয়ায়, এ বছরের অগ্রহায়ন মাসেই তাঁদের বিয়ে ঠিক হয়। সেই নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে গায়ত্রীর পরিবারের দাবি। মেয়ের জন্য বিয়ের গয়নাগাটিও কেনা হয়ে গিয়েছিল বলেও জানায় তারা।
জানা গিয়েছে, বুধবার বেলার দিকে বিশ্বজিৎ এবং গায়ত্রী দেখা করে। এর পরেই কোনও এক অজ্ঞাত কারনে যুগলের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বিশ্বজিৎ আত্মঘাতী হন। আর এই ঘটনা জানার পর ওই দিনই বিকেল ৩টে নাগাদ নিজের বাড়িতে একই কায়দায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় গায়ত্রীও। কিন্তু ঠিক কী কারনে এই যুগল আত্মঘাতী হয়েছে সে বিষয়ে পরিবারের কেউই কিছু জানাতে পারেনি।
এই ঘটনার পর, এক দিকে বিশ্বজিতের পরিবারের সন্দেহ, গায়ত্রীর পরিবার আগে বিয়েতে রাজি থাকলেও এখন তারা হয়তো এই সম্পর্ক মানতে রাজি হচ্ছিল না। সেই কারণে মেয়েটি হয়তো সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাইছিল। তার জন্যই নিজেকে শেষ করে দিয়েছে বিশ্বজিৎ। যদিও মেয়ের পরিবারের তরফে দাবি, তারা মেয়ের ইচ্ছে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু কেন এমনটা ঘটল তা কারও জানা নেই। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলি দুই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কোনও পরিবারের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।