Advertisement
E-Paper

বিজেপির সমর্থনে প্রধান: সুফিয়ানের জামাইকাণ্ডে রাজ্য নেতৃত্বকে নালিশ নন্দীগ্রাম তৃণমূলের

নন্দীগ্রাম তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, বিজেপির সমর্থন নিয়ে পঞ্চায়েতের প্রধান হয়ে দলের নীতি ভেঙেছেন সুফিয়ানের জামাই। গোটা ঘটনার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৩৩
Nandigram TMC make complaint against son-in-law of Sk Sufian for breach party stand

শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।

নন্দীগ্রামের মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে দলের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে বিজেপির সমর্থনে প্রধান পদে বসেছেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুল। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও তৃণমূল মনোনীত প্রধান হেরে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, উপপ্রধান পদে বিজেপি প্রার্থীকে সরাসরি ভোট দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে সুফিয়ানের দুই মেয়ে এবং জামাইয়ের বিরুদ্ধে। যদিও ভোটাভুটির পর ‘টাই’ হওয়ায় লটারির মাধ্যমে তৃণমূল প্রার্থীকেই জয়ী বলে ঘোষণা করা হয় হয়। সুফিয়ানের জামাইয়ের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। ব্লক তৃণমূলের তরফে এই ঘটনা নিয়ে সবিস্তারে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ করায় হাবিবুলের কঠোর শাস্তির দাবিও তোলা হয়েছে।

শুক্রবার রাতেই ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ গোটা ঘটনার প্রতিবাদে ব্লক দলীয় দফতরে গিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারী শেখ শমসের আলম, আব্দুল আহমেদদের বক্তব্য, “দলের নীতি না মেনে বার বার গায়ের জোরে অঞ্চলের প্রধান হয়েছেন সুফিয়ানের জামাই হাবিবুল। বিক্ষোভকারীদের এক জনের কথায়, “গত বার কংগ্রেস ও অন্যান্যদের সাহায্য নিয়েছিলেন, আর এ বার চক্ষুলজ্জা ভুলে সরাসরি বিজেপির সাহায্য নিয়ে প্রধান হয়েছেন। বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাতকারী সুফিয়ানের জামাই এবং দুই মেয়ের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাছি।” একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি, দল উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থীরা প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন।

নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গও গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। বিজেপি যে ভাবে দলীয় প্যাডে নির্দেশ জারি করে হাবিবুলকে প্রধান হতে সাহায্য করেছে, তা সব সীমা লঙ্ঘন করেছে বলেই তাঁর মত। বাপ্পাদিত্য জানান, মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে যা কিছু ঘটেছে, তার জন্য এলাকাবাসীরা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। তাঁরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বাপ্পাদিত্য বলেন, “গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দলের জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও লিখিত ভাবে জানিয়েছি। দল যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।”

সংবাদমাধ্যমের কাছে সুফিয়ান অবশ্য বলেন, “আমি মনেপ্রাণে তৃণমূলের এক জন সৈনিক। আমার পরিবারের সদস্যেরাও তৃণমূলের প্রতীকেই জয়ী হয়েছেন। এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে। তৃণমূলের সদস্যদের ভোটেই প্রধান হয়েছেন হাবিবুল।” সুফিয়ানের দাবি, কিছু মানুষ ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন। বিজেপিও সুযোগ বুঝে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব সামলেছিলেন একদা নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের নেতা এবং তৎকালীন তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান। সেই নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়েও বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগ উঠেছিল সুফিয়ানের বিরুদ্ধে। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুফিয়ান-সহ তাঁর গোষ্ঠীর সবাইকেই ছেঁটে ফেলে তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে শেষ মুহূর্তে মহম্মদপুর পঞ্চায়েতে সুফিয়ানের জামাই এবং দুই মেয়েকে টিকিট দেয় তৃণমূল। তাঁরা জয়ীও হন।

মহম্মদপুর পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনে মধ্যে ১২টিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতেছে তৃণমূল। বাকি ৬টি আসন যায় বিজেপির দখলে। তৃণমূলের তরফে প্রধান হিসেবে শেখ শাহানওয়াজ। কিন্তু প্রধান হওয়ার দাবিতে অনড় ছিলেন এই পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান তথা সুফিয়ানের জামাই হাবিবুল। ইতিমধ্যে হাবিবুলকে সমর্থন জানানোর জন্য বিজেপি সদস্যদের দেওয়া নির্দেশ সংবলিত একটি চিঠি সমাজমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে (যদিও এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তা ছাড়া বিজেপির উপপ্রধানকে ভোট দেওয়ার ঘটনা নিয়েও সুফিয়ানের মেয়ে এবং জামাইয়ের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল।

Sheikh Sufian Nandigram TMC son in law BJP Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy