Advertisement
E-Paper

Tourism: নিসর্গ ও ইতিহাসের মেলবন্ধন সত্ত্বেও পর্যটনে ব্রাত্য লালগড়

। দলে দলে পর্যটক আসছেন শীতের মরসুমে। অথচ জেলার পর্যটনে ব্রাত্য হয়ে রয়েছে লালগড়। তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:০৬

লালগড় আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই সাম্প্রতিক অতীতে শিরোনামে এসেছে জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রাম। ক্রমে বদলে গিয়েছে জেলার ছবিটা। এ বার করোনা পরিস্থিতিতে রাশ পড়ায় জেলার পর্যটনের পালে হাওয়া লেগেছে। দলে দলে পর্যটক আসছেন শীতের মরসুমে। অথচ জেলার পর্যটনে ব্রাত্য হয়ে রয়েছে লালগড়। তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যেও।

২০০৮-২০০৯ সালে মাওবাদী ও জনসাধারণের কমিটির আন্দোলনের হাত ধরেই পরিচিতির বৃত্তে উঠে আসে লালগড়। রক্তস্নাত অধ্যায় পেরিয়ে এখন কংসাবতীর উপরে সেতু হওয়ায় জেলা সদর ঝাড়গ্রামের সঙ্গে লালগড়ের যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। ঝাড়গ্রাম থেকে লালগড়ের দূরত্বও কমে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় পর্যটনের বিপুল প্রসার ঘটেছে। এক সময়ের মাওবাদী সন্ত্রাস কবলিত বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর, আগুইবিলের মতো এলাকায় তৈরি হয়েছে একাধিক বেসরকারি হোম স্টে। ২০০৪ সালে মাওবাদীরা কাঁকড়াঝোরে সরকারি বন বাংলো মাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছিল। ২০২১-এ সেই কাঁকড়াঝোরে সরকারি বরাদ্দে স্থানীয় বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েতের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সরকারি অতিথিশালা। এক সময়ের অনাহারের গ্রাম আমলাশোলেও এখন বেসরকারি উদ্যোগে হোম স্টে হয়েছে। ভিড় করছে পর্যটকদের দল। ঝাড়গ্রাম শহরের আশাপাশে গ্রামীণ এলাকাগুলিতেও বেশ কিছু হোম স্টে ও গ্রামীণ রিসর্ট হয়েছে। সাঁকরাইল ব্লকের মানগোবিন্দপুরে গ্রামীণ রিসর্টে পর্যটকরা থাকছেন।

অথচ কংসাবতী নদী, ঘন শালের জঙ্গল, প্রাচীন পুরাতত্ত্বের নিদর্শন থাকা সত্ত্বেও সরকারি কিংবা বেসরকারি স্তরে জেলার পর্যটন তালিকায় সে ভাবে লালগড়কে তুলে ধরার কোনও উদ্যোগ হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।পর্যটন সংস্থাগুলিও এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। লালগড়ের বাসিন্দা লোকসংস্কৃতি গবেষক পঙ্কজ মণ্ডল জানাচ্ছেন, লালগড় রাজবাড়ি, কংসাবতীর চর, রাজ পরিবারের কয়েক শতাব্দী প্রাচীন রাধামোহনের মন্দির, রামগড় রাজবাড়ি, রামগড় রাজ বাড়ি চত্বরের কালাচাঁদের প্রাচীন মন্দির, রামগড়ে মা মৌজির মন্দিরের পাশাপাশি, জঙ্গল প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকাগুলিতে কার্যত পর্যটকদের দেখাই মেলে না। নেতাই গ্রামের অদূরে ডাইনটিকরি গ্রামে কংসাবতীর ধারে বৌদ্ধযুগের একটি মন্দির ধ্বংসের মুখে। সে ভাবে প্রচার না হওয়ায় লালগড় ও রামগড়ে পর্যটন উপযোগী পরিকাঠামোই গড়ে ওঠেনি। লালগড়ে সরকারি বা বেসরকারি থাকার জায়গা নেই। পঙ্কজ বলছেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম ও বেলপাহাড়ির গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বহু হোম স্টে তৈরি হওয়ায় ওই সব এলাকার স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসীরা বিকল্প রুজির মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। লালগড়ে তেমন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে পর্যটন-ভিত্তিক আর্থ-সামাজিক উন্নতির সুযোগ ঘটতে পারে।’’

পর্যটন দফতর স্বীকৃত ঝাড়গ্রাম টুরিজ়ম-এর কর্তা সুমিত দত্ত বলছেন, ‘‘লালগড় ঝাড়গ্রামের এক প্রান্তে থাকায় সেভাবে পর্যটনের প্রচারে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। প্রশাসনিক উদ্যোগে প্রাচীন পুরাকীর্তি গুলির সংস্কার ও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে বনভোজনের স্থায়ী জায়গা, পার্ক ইত্যাদি হলে এবং সৌন্দর্যায়নের কাজ হলে পর্যটকদেরও আগ্রহী করে তোলা যাবে।’’ সুমিত জানাচ্ছেন, কংসাবতীতে নৌকাভ্রমণেরও ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘পর্যটন সংস্থাগুলির তরফে কোনও প্রস্তাব আসেনি। প্রস্তাব এলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’’

travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy