Advertisement
০৪ মে ২০২৪

লালগড়-ঝাড়গ্রাম দূরত্ব কমাতে হচ্ছে নয়া রাস্তা

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নতুন রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন রাস্তাটি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন বলে প্রশাসনিক সুত্রে খবর। নতুন রাস্তাটি চালু হলে লালগড়বাসীর মেদিনীপুর নির্ভরতা অনেকটাই কমানো যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসনিক মহল।

চলছে রাস্তার কাজ। নিজস্ব চিত্র

চলছে রাস্তার কাজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:২৭
Share: Save:

জেলা শহর ঝাড়গ্রাম থেকে লালগড়ের দূরত্ব কমছে! ১৬ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা খরচ করে পূর্ত (সড়ক) দফতরের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে নতুন চওড়া রাস্তা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নতুন রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন রাস্তাটি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন বলে প্রশাসনিক সুত্রে খবর। নতুন রাস্তাটি চালু হলে লালগড়বাসীর মেদিনীপুর নির্ভরতা অনেকটাই কমানো যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসনিক মহল। সেই সঙ্গে ঝাড়গ্রাম থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় ও চন্দ্রকোনা এলাকার মধ্যে যোগাযোগও সহজ হবে।

বাম আমলে কংসাবতী নদীতে সেতু না থাকায় তৎকালীন মহকুমা সদর ঝাড়গ্রামে যেতে কালঘাম ছুটত এলাকাবাসীর। শুখা মরসুমে বাঁশের সাঁকো, কিংবা ফেয়ার ওয়েদার কাঠের সাঁকো পেরিয়ে সাইকেল, মোটরবাইকে যাতায়াত করতে হত। বর্ষায় সাঁকো ধুয়ে গেলে চলত নৌকোয় পারাপার। আর গাড়িতে অনেকটা ঘুরপথে ঝাড়গ্রাম যেতে হত। তুলনায় লালগড় ব্লক সদর ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি থেকে ৪২ কিলোমিটার দূরে সড়ক পথে মেদিনীপুর শহরে যাতায়াত অনেকটাই সহজ। মেদিনীপুরের সঙ্গে লালগড়ের বাস যোগাযোগও খুব ভাল। নানা প্রয়োজনে লালগড়ের বাসিন্দাদের প্রায়ই মেদিনীপুরে যেতে হয়। বাম আমলের শেষের দিকে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়াতে কংসাবতী নদীর উপর সেতু তৈরি হয়। লালগড় থেকে ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব কিছুটা কম হলেও লালগড়বাসীর মেদিনীপুর নির্ভরতা কমেনি। বর্তমান তৃণমূল সরকারের আমলে লালগড়-ঝাড়গ্রামের সহজ যোগাযোগের জন্য কানাইপাল এলাকায় কংসাবতী নদীর উপর ৫১ কোটি টাকা খরচ করে ৬৫০ মিটার লম্বা কংক্রিটের সেতু তৈরি করেছে সেচ দফতর। ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেতুটি চালু হওয়ার পরে সমস্যা দেখা দেয়।

লালগড় থেকে সেতু পেরিয়ে ঝাড়গ্রামের দিকে যেতে হলে ৩৯৫ মিটার অপ্রোচ রোডের পর বেলাটিকরির দিকে যাওয়ার ৭০ মিটার রাস্তাটি খুব সরু। গলির মতো ওই রাস্তার দুপাশে বাড়ি থাকায় বড় গাড়ি চলাচলে খুবই সমস্যা হয়। সেতু পেলেও লালগড়বাসীর কাছে তাই ঝাড়গ্রাম দুয়োরানি হয়ে রয়েছে। ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হওয়ার পর এ বার লালগড়-ঝাড়গ্রামের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। লালগড় থেকে ধামরো, চন্দ্রপুর হয়ে তৈরি হচ্ছে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার নতুন রাস্তা।

পূর্ত (সড়ক) দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, লালগড় থেকে এখন বেলাটিকরি হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। আর লালগড় থেকে ধামরো হয়ে নতুন রাস্তায় ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, লালগড় সেতু থেকে ধামরো হয়ে রাস্তা তৈরি করতে হবে। লালগড় সেতু থেকে ধামরো হয়ে দহিজুড়ি মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার চওড়া পিচ রাস্তা হচ্ছে। লালগড় থেকে চন্দ্রপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি ৭ মিটার চওড়া হবে। আর চন্দ্রপুর মোড় থেকে দহিজুড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া হবে। লালগড়ের বাসিন্দারা বলছেন, নতুন রাস্তায় অনেক কম সময়ে ঝাড়গ্রামে যাওয়া যাবে।

পূর্ত (সড়ক) দফতরের ঝাড়গ্রাম জেলার এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র কৃষ্ণপদ মাহাতো বলেন, ‘‘রাস্তা তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। আশা করা যায়, মার্চের মধ্যে নতুন পিচ রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো আশাবাদী, নতুন রাস্তার জন্য লালগড়-ঝাড়গ্রাম কাছাকাছি হচ্ছে। লালগড়বাসী এখন নিজের জেলা শহরে সহজে যাতায়াত করতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE