আগেও দুশ্চিন্তা ছিল। এখনও দুশ্চিন্তায় আছি।
স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়ে ভেবেছিলাম কী করব! নানা জটে দীর্ঘদিন আটকেছিল এসএসসি পরীক্ষা। রবিবার পরীক্ষা দিয়েছি ঠিকই, কিন্তু ভয় হচ্ছে পাছে আবার আইনি জট না তৈরি হয়ে যায়। দিঘায় আমার শ্বশুরবাড়ি। ২০১৯ সালে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হই। বিএড নিয়ে ভর্তিও হয়েছিলাম। এর মধ্যেই বিয়ে হয়। ভেবেছিলাম শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আর কোনওদিন পূরণ হবে না। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে বিএড সম্পূর্ণ করতে উৎসাহ দেয় সকলে। নতুন জোরে পড়াশোনা শুরু করি। উত্তীর্ণ হই।
কিন্তু কী হবে এত ডিগ্রি নিয়ে! তখন প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা বন্ধ। ভেবেছি, এই হবে এই হবে। তার পর দীর্ঘদিন আইনি জটিলতায় হয়নি। ততদিনে বাচ্চা হয়ে গিয়েছে। স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি আর কোলের বাচ্চাকে নিয়ে সংসার সামলানোর পর পড়াশোনার ইচ্ছে হত না। পড়াশোনার রোজকার অভ্যাস একটু একটু করে কমছিল। কিন্তু এ বছর শুনলাম, আদালতের নির্দেশে ফের পরীক্ষা নেবে এসএসসি। শুরু করে দিলাম প্রস্তুতি। সারাদিন সংসার। রাতে সকলে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর বই নিয়ে পড়তাম। অনলাইনে পড়াশোনা করতাম।
কাঁথি শহরের রাখালচন্দ্র বিদ্যাপীঠে আমার পরীক্ষা ছিল। পরে দেখলাম, যা পড়েছি প্রায় সে রকমই প্রশ্ন এসেছে। উত্তরও লিখেছি অনেক প্রশ্নের। আশা করছি, লিখিত পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারব। কিন্তু একটা খটকা লাগছে। ‘চাকরিহারা’দের অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হচ্ছে এমনিতেই। এতে আমরা খানিকটা হলেও পিছিয়ে যাব। তবে যাই হোক, অহেতুক আর কোনও জটিলতা চাই না। প্রতি বছর যেন এসএসসি পরীক্ষা হয়, যাতে আমাদের মতো শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীরা নিজেদের যোগ্যতা যাচাইয়ের সুযোগটুকু পান। না হলে বড্ড বেশি অবিচার হয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রতি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)