কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ইতিমধ্যে কমিশন তাদের রিপোর্ট হাই কোর্টে জমাও দিয়েছে। তার ছত্রে ছত্রে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করা হয়েছে। সে নিয়ে জেলাতেও রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত।
কমিশনের কাছে মেদিনীপুরের তিন জেলা থেকে সব মিলিয়ে ৯০টি অভিযোগ গিয়েছিল। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে গিয়েছে ৫৫টি অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ২৭টি এবং ঝাড়গ্রাম থেকে গিয়েছে ৮টি অভিযোগ। কমিশনের প্রতিনিধি দল সরাসরি ও অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে যেমন তথ্য সংগ্রহ করেছেন, তেমনই স্থানীয় সূত্র মারফতও নানা ঘটনা জানতে পেরেছে। স্থানীয় সূত্রের বিশদ ব্যাখ্যা রিপোর্টে মেলেনি। রাজ্যের সব জেলা থেকে মোট ১,৯৭৯টি অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। ২ মে থেকে ২০ জুনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় সব মিলিয়ে ১,৯৩৪টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ১,১৬৮টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ৯,৩০৪। গ্রেফতার করা হয়েছে ১,৩৪৫ জন অর্থাৎ, অভিযুক্তের ১৪ শতাংশ। ধৃতদের মধ্যে ১,০৮৬ জন অর্থাৎ, ৮০ শতাংশই জামিন পেয়েছে। ৩ শতাংশ জেলে রয়েছে। ৯৭ শতাংশ জেলের বাইরে রয়েছে।
সূত্রের খবর, মেদিনীপুরের তিন জেলাতেও যত অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার সব ক্ষেত্রে এফআইআর হয়নি। বিষয়টি নজরে এসেছে কমিশনের দলেরও। পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিল কমিশনের একাধিক দল। একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য রাজুল দেশাই। মেদিনীপুরে এসে রাজুল অভিযোগকারীদের কথা শুনেছিলেন। তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেছিলেন। তাঁর কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মহিলারা। এক জনের দাবি ছিল, ‘অত্যাচারে’র অভিযোগ জানাতে তিনি থানায় গিয়েছিলেন। স্থানীয় থানার আইসি তাঁকে শুনিয়েছিলেন, ‘আমাদের কাছে এসেছিস কেন! তোদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে যা!’ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করেছে কমিশন।