Advertisement
E-Paper

পারিবারিক বিবাদ, ঘুমন্ত ভাইপো-ভাইঝিকে পুড়িয়ে মারল কাকা

প্রতিবেশীরা জানান, রোজকার মতোই রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন বছর আটচল্লিশের ফতেমা বিবি। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে একটি ঘরেই শুয়েছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ১৪:০৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

গভীর রাতে সকলেই তখন ঘুমে আচ্ছন্ন। মায়ের পাশেই ঘুমন্ত দুই ভাই-বোন। রোজকার মতোই খাওয়া-দাওয়া সেরে মায়ের সঙ্গেই ঘুমোতে গিয়েছে তারা। আচমকাই তীব্র উত্তাপে ঘুম ভেঙে গেল মায়ের। ঘরে তখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের সুন্দরপুর গ্রামের ঘটনা। পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘরে তালা লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে ভাইপো-ভাইঝিকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল কাকার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছ়ড়িয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত কাজি ইসমাইল।

ঠিক কী ঘটেছিল?

প্রতিবেশীরা জানান, রোজকার মতোই রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন বছর আটচল্লিশের ফতেমা বিবি। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে একটি ঘরেই শুয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, গভীর ঘুমে সবাই যখন আচ্ছন্ন, সে সময়েই তাঁর দেওর কাজি ইসমাইল বেশ কয়েক জন লোক নিয়ে এসে জানলা দিয়ে ঘরের ভিতর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘুম ভাঙতেই ফতেমা বিবি দেখেন গোটা ঘরে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। ঘরের ভিতর থেকেই চিত্কার করে পড়শিদের ডাকাডাকি শুরু করেন তিনি। দৌড়ে দরজার দিকে গিয়েও চেষ্টা করে সেটি খুলতে পারেননি। তত ক্ষণে আগুনে ঝলসে গিয়েছে তাঁর ছেলে রাজীব কাজি এবং মেয়ে রেশমী খাতুন। অগ্নিদগ্ধ হন ফতেমা বিবিও। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় রেশমী ও রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ফতেমা বিবি।

আরও পড়ুন: নিজের হাতে ভেন্টিলেটর বানিয়ে তিন ঘণ্টার লড়াই, প্রাণ বাঁচল সর্পদষ্টের


আক্রান্ত ফতেমা বিবির বাড়ি।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে। ঘাটালের কাজিরহাট সংলগ্ন সুন্দরপুর গ্রামে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন ফতেমা বিবি। তাঁর স্বামী কাজি হাসেম আলি কর্মসূত্রে থাকেন মুম্বইয়ে। প্রতিবাশীরা জানান, হাসেমের বাড়ির পাশেই থাকতেন তাঁর ভাই ইসমাইল। দীর্ঘ দিন ধরেই দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে গ্রামে দু’বার সালিশি সভাও বসে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। অভিযোগ, তখন থেকেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তক্কে তক্কে ছিলেন ইসমাইল। এমনকী হাসেম ও তাঁর স্ত্রীকে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। ওই দিন রাতে গোটা গ্রাম যখন ঘুমিয়ে পড়েছে, সেই সুযোগে ফতেমা বিবির বাড়িতে হামলা চালায় ইসমাইল। হামলা চালানোর আগে ফতেমা বিবির ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয় সে। শুধু তাই নয়, সাহায্যের জন্য যাতে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসতে না পারেন, সে জন্য সেই বাড়িতেও তালা লাগিয়ে দেয় ইসমাইল। ফতেমা বিবির বাড়িতে আগুন লাগিয়ে চম্পট দেয় ইসমাইল। এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। ইসমাইলের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালান তাঁরা। বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেখানে পৌঁছলে তাদের লক্ষ করে ইট ছোড়েন গ্রামবাসীরা। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। পুলিশ আটক করেছে ইসমাইলের মা ও বোনকে। ইসমাইলের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

ছবি: কৌশিক সাঁতরা।

Crime Ghatal West Midnapore ঘাটাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy