ভাগাড় কাণ্ড সামনে আসার পরে ঘাটালের বিভিন্ন হোটেলে ঘুরে ঘুরে খাবারের মান পরীক্ষা হয়েছিল। ফাইল চিত্র
বছর প্রায় ঘুরতে চলল। এখনও পরীক্ষার ফল এল না।
গত বছর কলকাতার ভাগাড়-কাণ্ডের রেশ এসে পৌঁছেছিল জেলাতেও। তারপর তৎপর হয়েছিল পুরসভাগুলি। অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহৃত মাংসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেগুলির গুণমান পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল কলকাতার পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরিতে। কিন্তু সে পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি এখনও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বললেন, “মাংসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরিতে পাঠনো হয়েছে। এখনও কোনওটিরই রিপোর্ট হাতে আসেনি।” কেন এতদিন পরেও রিপোর্ট এল না? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নমুনা এসেছে পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরিতে। ধীরে ধীরে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। গিরিশচন্দ্রও বলেছেন, ‘‘শুনেছি পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে খুব চাপ থাকে। অন্য নানা পরীক্ষার রিপোর্ট ধীরে ধীরে পাচ্ছি। আশা করছি, ওই পরীক্ষার রিপোর্টগুলিও পেয়ে যাব।’’
রিপোর্ট মেলেনি। তাই ব্যবস্থা নেওয়ারও উপায় নেই। চন্দ্রকোনা পুরসভার চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়া বললেন, “আমরা তখন দোকান মালিকদের সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু রিপোর্ট না আসায় হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষের কথায়, “পরিকাঠামো নানা সমস্যা ছিল। তা উতরে আমরা হোটেল থেকে মাংসের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতরের মারফত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। রিপোর্ট আসেনি।”
মেদিনীপুর পুরসভায় স্বাস্থ্য দফতর ফুড সেফটি অফিসার নিয়ে সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনে শহরের হোটেল, রেস্তরাঁগুলিতে ঢুঁ মেরেছিল। অভিযানে নেমেছিলেন ঘাটাল, খড়্গপুর, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই পুর কর্তৃপক্ষও। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
রিপোর্ট আসেনি। তাই ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এরই মধ্যে ভাটা প়ড়েছে অভিযানে। ঝাড়গ্রাম শহরের এক রেস্তরাঁর মালিক মৃন্ময় কুণ্ডু বললেন, ‘‘গত বছর মাত্র এক বারই পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মাংসের মান পরীক্ষা করতে এসেছিলেন। তারপর আর কেউ আসেননি।’’ ঘাটাল শহরের এক হোটেল মালিকের স্বীকারোক্তি, “হোটেলে বড়জোর একটি ফ্রিজ থাকে। সেখানে কি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে মাংস সংরক্ষণ করা যায়! এতেই তো ব্যবসা দিব্য চলছে!”
দাসপুরের এক শিক্ষক অমর মণ্ডল বললেন, “বছর ঘুরল, রিপোর্ট এল না। এর দায় কেউ অস্বীকার করতে পারে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy