প্রথমদিন পুলিশ বলেছিল পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ হলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। মন্দারমণিতে প্যারাসেলিং দুর্ঘটনায় পর্যটক তরুণ ঘোষের মৃত্যুতে লিখিত অভিযোগ দায়েরের চার দিন পরেও কোনও পদক্ষেপ করেনি রামনগর থানা।
অভিযুক্ত সংস্থা ‘বেঙ্গল অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস’-এর কর্ণধার সত্যরঞ্জন খাটুয়া তৃণমূল নেতা বলেই কি পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরাও।
গত ২৬ জুন তরুণ ঘোষের বন্ধু অমৃত মণ্ডল রামনগর থানায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় বেঙ্গল অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের বিরুদ্ধে খুন, প্রমাণ লোপের চেষ্ঠার অভিযোগে একটি মামলা রুজু করে। কিন্তু তারপর তিনদিন কেটে গিয়েছে। সংস্থার কর্ণধার সত্যরঞ্জন খাটুয়া বা অন্য কোনও কর্মীকেই গ্রেফতার করতে পারেনি তারা।
এ বিষয়ে রামনগর থানার বক্তব্য, অমৃতবাবু বেঙ্গল অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস, প্যারাসেলিং করা গাড়ির চালক ও চার জন প্যারাসেলিং কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছেন। কিন্তু সে অভিযোগে নির্দিষ্ট করে কারও নাম নেই। এ দিকে তবে পুলিশের আশ্বাস, সংস্থার কর্ণধার সত্যরঞ্জন খাঁটুয়া-সহ অন্যান্য কর্মীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা চালছে। দু’একদিনের মধ্যেই সবাইকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এ দিকে মামলা দায়ের করার তিনদিন পরেও কাউকে গ্রেফতার না করার পিছনে তৃণমূলের রাজনীতি কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা সিপিএমের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক। তাঁর অভিযোগ, “মন্দারমণি সৈকতে তৃণমূল নেতাদের মদতেই বেআইনি ও অবৈধভাবে চলছিল প্যারাসেলিং ব্যবসা। ভয়ঙ্কর ওই দুর্ঘটনার পর অভিযোগ দায়ের হলেও কোনও পদক্ষেপ করছে না পুলিশ। কারণ অভিযুক্ত সংস্থার মালিক তৃণমূলের লোক।’’ তাঁর কটাক্ষ, পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে সাহস পাচ্ছে না। দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে রামনগর থানায় স্মারকলিপি জমা দিয়েছে সিপিএম।
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, “রাজনৈতিক রং না-দেখে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।” অন্য দিকে অভিযুক্ত সত্যরঞ্জন খাটুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই তিনি ফোন ধরছেন না। কিন্তু তিনি পলাতক নন। সূত্রের খবর মাঝেমধ্যেই তাঁকে সাবাজপুট গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে দেখা যাচ্ছে। তবে পুলিশের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে তো কিছুটা সময় লাগে। তবে অভিযুক্তকে ধরা হবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy