Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Adoption

বাবা-মা ও প্রবাসে ঘর পেল শিশুকন্যা 

ওই দম্পত্তির নিজেদের দুই সন্তান রয়েছে। তারপরেও তাঁরা অনলাইনে ভারতীয় শিশুকন্যাকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।

মধুর মুর্হূত। মানিকপাড়ায় শলাকা।

মধুর মুর্হূত। মানিকপাড়ায় শলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানিকপাড়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৬:৩১
Share: Save:

সাড়ে তিন বছরের খুদে পেল নিজের নতুন ঘর।

ঝাড়গ্রাম জেলার মানিকপাড়া এলাকার নিবেদিতা গ্রামীণ কর্মমন্দিরের দত্তক হোমের এই ছোট্ট আবাসিককে দত্তক নিল অনাবাসী এক দম্পতি। শনিবার দুপুরে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই শিশুকন্যাকে তার পালক মায়ের হাতে তুলে দেন হোম কর্তৃপক্ষ। ছিলেন জেলার শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারপার্সন শান্তনু ভুঁইয়া ও জেলার শিশুসুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাস।

আমেরিকার কানেটিকাট শহরের বাসিন্দা পেশায় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিজ্ঞানী শলাকা এস পটেল এ দিন ওই শিশুটিকে দত্তক নেন। অনাবাসী ভারতীয় শলাকার স্বামী মহম্মদ আসিম খাজা আমেরিকার নাগরিক। খাজা পেশায় চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ওই দম্পত্তির নিজেদের দুই সন্তান রয়েছে। তারপরেও তাঁরা অনলাইনে ভারতীয় শিশুকন্যাকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কেন? শলাকা জানান, অবাঞ্ছিত শিশুকন্যারা অবহেলার শিকার হয়। সেই কারণেই একটি কন্যাশিশুকে উপযুক্ত ভাবে মানুষ করার জন্য স্বামীর সঙ্গে সহমত হয়েই এই দত্তক নিয়েছি। করোনার বিধিনিষেধের জন্য খাজা আমেরিকা থেকে আসার ছাড়পত্র পাননি।

নিবেদিতা গ্রামীণ কর্মমন্দিরের সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বারো বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনে আমাদের দত্তক হোম চলছে। এ পর্যন্ত ১১২টি শিশু দত্তক বাবা-মায়ের কাছে গিয়েছে। তবে এই প্রথমবার বিদেশে কোনও শিশু পাড়ি দিল।’’ দেবাশিস জানান, সেন্ট্রাল অ্যাডপসন রিসোর্স অথরিটির তত্ত্বাবধানে অথরাইজড ফরেন অ্যাডপসন এজেন্সি-র মাধ্যমে আগামী এক বছর ওই শিশুটি দত্তক নেওয়া বাবা-মায়ের কাছে কেমন রয়েছে, তা পর্যবক্ষণ করা হবে।

হোম সূত্রে জানা গেল, ২০১৮ সালের ১৬ মে খড়্গপুর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা টাটা-খড়্গপুর প্যাসেঞ্জারের একটি খালি কামরায় একটি শিশুকন্যাটিকে উদ্ধার করেন রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানেরা। উদ্ধারের পরে তাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাক ঠাঁই হয় মানিকপাড়ার ওই দত্তক হোমে। এখন মানিকপাড়ার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ নিচ্ছিল সে। এ দিন শলাকার সঙ্গে সকাল থেকে হোম প্রাঙ্গণে সময় কাটায় ওই খুদে। এক সময়ে শলাকার কোলেও ঘুমিয়ে পড়ে। গাড়িতে করে নতুন মায়ের সঙ্গে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময়ে সবাইকে হাত নেড়ে টাটা করে ওই শিশুকন্যা। জেলার শিশুসুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাস বলেন, ‘‘সম্পন্ন মানুষজন এভাবে এগিয়ে এলে আরও অনেকে বাবা-মায়ের স্নেহ ও ঘর পাবে।’’ নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adoption Manikpara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE