Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আক্রান্ত ৫২ জনের ২৬ জনই পরিযায়ী, দু’সপ্তাহে দ্বিগুণ

জেলার স্বাস্থ্যভবন মানছে, পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরা শুরু করতেই আক্রান্তের সংখ্যা তর তর করে বাড়ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৩:৩৪
Share: Save:

সপ্তাহ দুয়েক আগে সংখ্যাটা ছিল ২০। এখন ৫২! অর্থাৎ, বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেন লাফিয়ে বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। বাড়ছে উদ্বেগও। ইতিমধ্যে জেলায় অনেক পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। আরও অনেকে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। সকলে ফিরলে আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, উদ্বেগ সেখানেই।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা অবশ্য বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরছেন। একে একে তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। তাঁদেরই কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাঁদের করোনা ধরা পড়ছে, তাঁদের নির্দিষ্ট হাসপাতালে (পাঁশকুড়ার বড়মা) পাঠানো হচ্ছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরও নিভৃতবাসে পাঠানো হচ্ছে।’’ অনেকে তো সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন? গিরীশচন্দ্রের জবাব, ‘‘বাড়তে পারে। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে পড়ে তা দেখা হচ্ছে।’’

জেলার স্বাস্থ্যভবন মানছে, পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরা শুরু করতেই আক্রান্তের সংখ্যা তর তর করে বাড়ছে। মঙ্গলবার নতুন করে ১২ জন করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। করোনা-কালে জেলার ক্ষেত্রে যা ‘রেকর্ড’, গত দু’মাসে আগে কখনও একদিনে এত আক্রান্তের হদিস মেলেনি। জানা যাচ্ছে, ওই ১২ জনের মধ্যে ১০ জনই পরিযায়ী শ্রমিক। ঘাটালের ৫ জন, দাসপুরের ৩ জন, খড়্গপুর শহরের ১ জন, সবংয়ের ১ জন এবং শালবনির ১ জন। সবং, শালবনির মতো ব্লকে এই প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলল। গত সোমবারও ৫ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছিল। ওই ৫ জনের মধ্যে ঘাটালের ২ জন, দাসপুরের ২ জন এবং চন্দ্রকোনার ১ জন। পরিস্থিতি দেখে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও মানছেন, ‘‘একাধিক নতুন এলাকায় আক্রান্তের হদিস মিলেছে।’’

অথচ, সপ্তাহ দু’য়েক আগেও জেলার ছবিটা এমন ছিল না। অনেক দিন এমনও গিয়েছে যে দিনে, নতুন আক্রান্তের হদিসই মেলেনি। অথচ, সেই সব দিনেও শ’য়ে শ’য়ে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তৃতীয় লকডাউনের পর থেকে ঘরে ফেরা শুরু হয়েছে পরিযায়ীদের। এরপর থেকেই করোনা আক্রান্ত বাড়ছে। জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ১৭ মে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০। ১৮ মে’ও সংখ্যা একই ছিল, ২০। ১৯ মে নতুন করে ৬ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছিল। পরে সংখ্যাটা বাড়তে শুরু করে। ২৯ মে ছিল ২৯। ৩০ মে-তে ছিল ৩০। ১ জুনে বেড়ে হয়েছে ৪০। আর ২ জুনে একলাফে বেড়ে হয়েছে ৫১! অর্থাৎ, এ দিনই আক্রান্ত হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছে।

জানা যাচ্ছে, আক্রান্ত ৫১ জনের মধ্যে ২৬ জনই পরিযায়ী শ্রমিক। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র ফেরত ১৭ জন, দিল্লি ফেরত ৮ জন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্মী মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘জেলায় করোনা আক্রান্তের শুরুটা হয়েছিল এক পরিযায়ীর হাত ধরেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE