Advertisement
E-Paper

তমলুক জুড়ে  বিপদ মাথায় দাঁড়িয়ে বাড়ি

দেওয়ালের গা বেয়ে ডালপালা ছড়িয়েছে বট-অশত্থ। বাড়ির দোতলার একাংশ ভেঙে যাওয়ায় সরে গিয়েছেন বাসিন্দারা। দোতলার ভাঙা ছাদ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে একতলায়।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০০:৩৭
 দেওয়ালে লাগানো পুরসভার বিজ্ঞপ্তি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

দেওয়ালে লাগানো পুরসভার বিজ্ঞপ্তি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

চুন-সুরকি আর ইটের দেওয়ালের একাংশ খসে পড়েছে। দেওয়ালের গা বেয়ে ডালপালা ছড়িয়েছে বট-অশত্থ। বাড়ির দোতলার একাংশ ভেঙে যাওয়ায় সরে গিয়েছেন বাসিন্দারা। দোতলার ভাঙা ছাদ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে একতলায়। সেখানে চারটি দোকানঘর। ভগ্নপ্রায় বাড়িটার পাশেই রাস্তা দিয়ে অনবরত যাতায়াত বাসিন্দাদের। বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কারওরই নজর এড়ায় না তার ভগ্ন চেহারা। যে কোনও সময় বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন কেউ কেউ। কিন্তু ওই পর্যন্তই। শহরে এই ধরনের একাধিক বাড়ি থাকলেও এবং তার থেকে বিপদের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সেগুলি নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

রবিবার কলকাতার প্রাচীন বৈঠকখানা বাজারের একাংশ ভেঙে পড়ায় সেই অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। হলদিয়া মহকুমার সুতাহাটার চৈতন্যপুর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে একটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ায় সেখানেও একই অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরের বড়বাজার-সহ শহরের গঙ্গারঘাট, ভীমারবাজার, পার্বতীপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি পুরসভার তরফে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হলেও সেগুলি দীর্ঘদিন একই ভাবে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। ওইসব বাড়ির লাগোয়া এলাকার দোকানদার ও বাসিন্দারা বাড়ি ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভগ্নপ্রায় বাড়িগুলিকে শুধু বিপজ্জনক ঘোষণা করেই দায় সেরেছে পুরসভা। ওইসব বাড়ি ভাঙা বা সংস্কারের জন্য কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘বড়বাজার-সহ বিভিন্ন জায়গায় ৫-৬টি বাড়ি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। পুরসভার তরফে বাড়িগুলি চিহ্নিত করে বিপজ্জনক ঘোষণা করে ভেঙে ফেলা বা সংস্কার করার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ বাড়ির মালিক আদালতে মামলা করেছেন। বাড়ি ভাঙায় স্থগিতাদেশ থাকায় ভাঙা যাচ্ছে না।’’

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেড়শো বছরেরও বেশি প্রাচীন তমলুক পুরসভার শঙ্করআড়ায় পুরমালিকানাধীন বড়বাজারের বয়স ১০০ বছরের বেশি। বাজারের একাংশ ভগ্নপ্রায়। শহরের অন্যতম জনবহুল এই বাজারের মধ্যে কয়েক’শো দোকানদার-কর্মচারী ছাড়াও প্রতিদিন কয়েক হাজার বাসিন্দা আসেন কেনাকাটা করতে। বাজারের মধ্যে শঙ্করআড়া খাল সংলগ্ন একটি বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক অবস্থায় বলে অভিযোগ। দোতলা ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। ওই বাড়ির পাশেই আনাজ ও মাছ-মাংসের দোকান রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বাড়ির যা অবস্থা আর যে ভাবে রোজ বৃষ্টি হচ্ছে তাতে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। রোজ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।

তাঁদের অভিযোগ, পুরসভা এখানে বহুতল বাড়ি তৈরি করে বাজার গড়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়নি। তাই বিপদ মাথায় নিয়েই বাড়ি ভাঙায় আপত্তি করা হয়েছে। বড়বাজারের কাছে গঙ্গারঘাট এলাকায় তিনটি বাড়ি ভগ্নপ্রায় হয়ে বিপজ্জনক অবস্থায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সব বাড়ির একাংশ মাঝেমাঝে ভেঙে পড়ে। অথচ পুরপ্রশাসন বিপজ্জনক ঘোষণা করেই দায় সারে।

বাড়ির মালিক জানান, পুরসভা ২০১৩ সালে বাড়িটি বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিল। বাড়িটি ভেঙে ফেলার জন্য পুরসভার লোকজনও এসেছিল। কিন্তু একজন ভাড়াটিয়ার বাধায় বাড়ি ভাঙা যায়নি। ফলে বিপদ জেনেও চুপ করে থাকতে হচ্ছে।

Old Building Corporation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy