Advertisement
E-Paper

বহির্বিভাগে হয়রানি রোগীদের

শুক্রবার সকালে ফের জেলা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে রক্ত দিতে হল ভীমচরণকে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ‘‘অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসে চিকিৎসককে দেখাতে গিয়েই ২টো বেজে গিয়েছিল। অথচ দুপুর ২টোর পরে পরীক্ষার জন্য রক্ত না নেওয়ায় তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হল।’’

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০২:২৬
জেলা হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগের বাইরে সেই নোটিস।

জেলা হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগের বাইরে সেই নোটিস।

জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসককে দেখাতে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তমলুকের পদুমপুর এলাকার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের ভীমচরণ মাইতি। চিকিৎসকের সুপারিশ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষার জন্য দুপুর আড়াইটা নাগাদ পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারলেন দুপুর ২টো বেজে গিয়েছে। তাই আর রক্তের নমুনা নেওয়া হবে না। কেন জানতে গিয়ে উত্তর পেলেন, ‘বহির্বিভাগের রোগীদের রক্ত দেওয়ার সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত’। কিন্তু চিকিৎসক তো লিখে দিয়েছেন। এ বার ওই বিভাগের কর্মীর কাছ থেকে উত্তর এল, ‘‘আজ আর হবে না। কাল ৯টা থেকে দুপুর ২টোর মধ্যে আসুন।’’ অসুস্থ ভীমচরণকে নিয়ে বাধ্য হয়েই বাড়ির পথ ধরলেন পরিবারের লোকেরা।

শুক্রবার সকালে ফের জেলা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে রক্ত দিতে হল ভীমচরণকে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ‘‘অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসে চিকিৎসককে দেখাতে গিয়েই ২টো বেজে গিয়েছিল। অথচ দুপুর ২টোর পরে পরীক্ষার জন্য রক্ত না নেওয়ায় তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হল।’’ চিকিৎসক দেখতে দেরি করলে তার দায় রোগীকে নিতে হবে কেন, সেই প্রশ্নও তুললেন তাঁরা। শুধু ভীমচরণের পরিবার নয়, তমলুক জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা বেশিরভাগ রোগী ও তাঁদের পরিবারও এমন অভিযোগ তুলেছেন।

তমলুক জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসকের সুপারিশমত রক্ত, মল-মূত্র বিনামূল্যে পরীক্ষার জন্য প্যাথলজি বিভাগ রয়েছে। রোগীদের ওইসব নমুনা সংগ্রহের পর তা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয় প্যাথলজি বিভাগ। কিন্তু ওই বিভাগে রোগীর রক্ত, মল ও মূত্রের নমুনা নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বহির্বিভাগের এবং সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অন্তর্বিভাগের রোগীদের নমুনা নেওয়া হয়। ফলে দুপুর ২টোর বহির্বিভাগের রোগীর রক্ত, মল, মূত্রের নমুনা নেওয়া বন্ধ থাকে।

হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, অধিকাংশ দিন বহির্বিভাগে রোগীর ভিড় থাকায় দুপুর ২টোর পরেও রোগী দেখেন চিকিৎসকরা। ফলে যে সব রোগীকে দুপুর ২টোর পরে চিকিৎসক রক্ত, মল-মূত্র পরীক্ষার সুপারিশ করেন তাঁরা আর সেদিন প্যাথলজি বিভাগে এসে নমুনা জমা দিতে পারেন না। ফের পরের দিন আসতে হয় তাঁদের। আর এতেই হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন রোগীরা।

হাসপাতালে যেখানে রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসেন, সেখানে তাঁদের জন্যই এমন নিয়ম কেন?

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে দু’জন চিকিৎসক, চার জন টেকনিশিয়ান আছেন। টেকনিশিয়ানদের প্রতিদিন বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ মিলিয়ে প্রায় দেড়শো রোগীর রক্ত, মল-মূত্রের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করতে হয়। সকাল ও সন্ধ্যা দুটি শিফটে ভাগ হয়ে কাজ করতে হয়। প্রয়োজনের তুলনায় টেকনিশিয়ান কম থাকাতেই এমন ব্যবস্থা। কিন্তু তার জন্য রোগীরা কেন সমস্যায় পড়বেন, সে প্রশ্নের কোনও উত্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। রোগীদের চিকিৎসার সুবিধায় অবিলম্বে এই সমস্যা দূর করার দাবি তুলেছেন রোগীর পরিজনরা।

হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘প্যাথলজি বিভাগে টেকনিশিয়ান কম। তাই হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীদের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যায় টেকনিশিয়ান পাওয়া গেলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।

Tamluk District Hospital Out Door Patient Blood Test
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy