Advertisement
১১ মে ২০২৪
Panchayat Election

বক্তৃতায় বঞ্চিত, নালিশ অভিষেকের দফতরে

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি আসনে হেরেছে ঘাসফুল শিবির। নির্বাচন পরবর্তী বিশ্লেষণে উঠে এসেছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত।

Minister of state Akhil Giri

অখিল গিরি। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৬
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। তার আগে আর এক বার মন্ত্রী এবং জেলা সভাপতির শিবিরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলে।

কারা দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি এবং বিধায়ক তথা কাথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতির মধ্যে দ্বন্দ্বের ছবি ফের প্রকাশ্যে এল বৃহস্পতিবার রামনগরে দলীয় সভাকে ঘিরে। রামনগরে ১২ ফেব্রুয়ারি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সভার পাল্টা হিসাবে বৃহস্পতিবার ওই সভা করে তৃণমূল। মন্ত্রী অখিল গিরির নিজের নির্বাচনী এলাকা রামনগরে দলের জনসভায় বলতেই দেওয়া হল না জেলা সভাপতিকে। এমনকী জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ দলের জেলা স্তরের পদাধিকারীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে দাবি তৃণমূলের একাংশের।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি আসনে হেরেছে ঘাসফুল শিবির। নির্বাচন পরবর্তী বিশ্লেষণে উঠে এসেছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আটকাতে নানা পদক্ষেপও করে রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু তাতে যে কাজ হয়নি আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে জেলায়। বৃহস্পতিবার রামনগরে দলের ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি (কাঁথি) তরুণ মাইতি। তবে প্রথম থেকেই তাঁকে মঞ্চে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়।সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আসানসোলের তারকা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিংহ। তাঁর আগে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক অখিল গিরি এবং সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তরুণ জানা, সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি আনোয়ার উদ্দিন প্রমুখ বক্তৃতা দেন। এঁদের সকলেই অখিল শিবিরের নেতা বলে পরিচিত। কিন্তু বক্তার তালিকায় একবারের জন্যও জেলা সভাপতি নাম ঘোষণা করা হয়নি। শুধুমাত্র জনসভার সমাপ্তি ঘোষণার জন্য জেলা সভাপতির হাতে একবার মাইক্রোফোন তুলে দেওয়া হয়।

জনসভায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকও অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘দলীয় সভার বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’’ জেলা সভাপতি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ পদাধিকারীদের ব্রাত্য রাখায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলেরই একটা বড় অংশ। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সাংসদ তথা সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে অভিযোগও জানিয়েছেন বলে জানা গিয়ে‌ছে। জেলা সভাপতি (কাঁথি) তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘কী হয়েছে না হয়েছে সকলেই দেখেছেন। তাই এই নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ সভা পরিচালনার দায়িত্ব থাকা মন্ত্রী অখিল গিরির প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’’

তবে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাসের ব্যাখ্যা, ‘‘জেলা সভাপতি যেহেতু জনসভার সভাপতি ছিলেন তাই তিনি একেবারে শেষে বলতে উঠেছিলেন। সভা পরিচালনার ভার সভাপতির হাতে থাকলেও তিনি অন্যকে সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন।’’ এই ঘটনাকে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির কাঁথি সংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘তৃণমূলে যে গণতন্ত্র নেই তা প্রমাণিত। যে দলে জেলা সভাপতি মর্যাদা পান না, তারা সাধারণ মানুষকে কতটা মর্যাদা দিতে পারেন তা স্পষ্ট!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election Akhil Giri Contai TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE