Advertisement
E-Paper

মহরমে নিরস্ত্র মিছিল থেকে শান্তির বার্তা

রবিবারের বিকেলে শহরে মিছিল করলেন প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ। শোক মিছিল— তাই সকলের মুখেই হা-হাসান, হা-হোসেন। মিছিলের শুরুতে মহরম পালনের বার্তা দেওয়া বড় ব্যানার।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৭
মিছিল: অস্ত্র ছাড়াই এগোলেন তাঁরা।—নিজস্ব চিত্র।

মিছিল: অস্ত্র ছাড়াই এগোলেন তাঁরা।—নিজস্ব চিত্র।

শহর জুড়ে শোক মিছিল— পরনে কালো পোশাক, মুখে মুখে হাসান-হোসেনের নামে হাহাকার। তাজিয়া, অস্ত্র আর লাঠি খেলার নকল যুদ্ধ। মহরমের চেনা ছবি এ বার কিছুটা অন্য রকম তমলুক শহরে।

রবিবারের বিকেলে শহরে মিছিল করলেন প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ। শোক মিছিল— তাই সকলের মুখেই হা-হাসান, হা-হোসেন। মিছিলের শুরুতে মহরম পালনের বার্তা দেওয়া বড় ব্যানার। আর সকলের হাতে ধরা শান্তি ও সম্প্রীতির স্লোগান লেখা পোস্টার। পৌর মুসলিম নাগরিক কমিটির ডাকে মহরমের মিছিলে সামিল হয়েছিলেন তমলুক শহর ও সংলগ্ন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার বিভিন্ন মহরম কমিটির কর্তা, সদস্য ও সমর্থকরা। কমিটির দাবি, অন্য বারের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এ বার মিছিলে হেঁটেছেন।

কেন অস্ত্র বর্জন? উদ্যোক্তারা স্পষ্ট জানালেন, অস্ত্র মিছিল ঐতিহ্য। কিন্তু ভারতবর্ষ অহিংস দেশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অস্ত্র মিছিলে ভুল বার্তা যেতে পারে দেশবাসীর কাছে। তাই শোক মিছিলে শুধুই শোকের আবহ। শান্তির বার্তা।

মহরমের দিন নিরস্ত্র মিছিল ঘিরে শহরবাসীর উৎসাহও ছিল নজরকাড়া। লালদিঘি এলাকার মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে জমায়েত হয়েছিলেন শহরের ন’টি মহরম কমিটির কর্মকর্তা, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-সহ মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্টজন ও শহর সংলগ্ন কুমরগঞ্জ, সোনামুই, শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকার মহরম কমিটির কর্মকর্তা, সদস্য ও সাধারণ বাসিন্দারা।

বিকেল ৩টে নাগাদ লালদিঘি থেকে মিছিল শুরু হয়ে তমলুক–পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে এগিয়ে যায় শহরের রাজাবাজার, জেলখানামোড়, পৌরসভা অফিস, স্টিমারঘাট ও বড়বাজার হয়ে হাসপাতাল মোড়। সেখান থেকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে শহরের মানিকতলা মোড় হয়ে ফের লালদিঘিতে মিছিল ফিরে যায়। লালদিঘি ইদগাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়।

মহরমের মিছিলে সামিল হওয়া তাম্রলিপ্ত পৌর নাগরিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শেখ জালালুদ্দিন বলেন, ‘‘অহিংসার দেশ আমাদের ভারত। এমন এক দিনে অহিংসা ও শান্তির বার্তা তুলে ধরতে ঐতিহাসিক শহর তমলুকের বাসিন্দা হিসেবে মহরমে নিরস্ত্র মিছিলের আয়োজন। আশাতীত সাড়া মিলেছে। আশা করি শান্তির বার্তা সারা রাজ্য ও দেশবাসীর কাছে পৌঁছাবে।’’

মিছিল নির্বিঘ্ন করতে অবশ্য পুলিশের তরফে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল কড়া। প্রায় আড়াই ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার পথ হেঁটে বিকেল সাড়ে ৫ টা নাগাদ লালদিঘি ইদ্গাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে মহরমের মিছিল শেষ হয়। মিছিল শেষে পৌর নাগরিক কমিটির সদস্য শেখ সেকেন্দার বলেন, ‘‘ধর্মীয় রীতি মেনে শোক পালন এবং শান্তির বার্তা দিতে এ বার আমরা নিরস্ত্রভাবে মিছিলের জন্য শহরের সব মহরম কমিটি ও শহর সংলগ্ন তিনটি মহরম কমিটিকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। শহরের মহরম কমিটিগুলির পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার মহরম কমিটির সদস্য-সহ বহু সাধারণ মানুষ মিছিলে সামিল হয়েছেন।’’

Muharram Rally Peace rally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy