Advertisement
E-Paper

বড় নেতা না হয়েও কেন খুন!

দেহ উদ্ধারের পর হুগলির দাদপুর থানার পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই তৃণমূল নেতাকে অন্যত্র খুন করে দেহ তালচিনানে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতদেহের গলায় তিনটি ফাঁসের দাগ ছিল। শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্নও ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১২
শোকার্ত পরিবার। সোমবার রীতেশ রায়ের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিবার। সোমবার রীতেশ রায়ের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

কাঁথির চাঁদবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত তৃণমূল নেতা রীতেশ ওরফে মানিক রায়, বেতালিয়ার দুরমুঠ কৃষি সমবায় সমিতির সভাপতি ছিলেন। তৃণমূলের চাদঁবেড়িয়া বুথের সভাপতিও ছিলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা এবং তৃণমূলের ব্লক নেতাদের দাবি, খুব বড় মাপের বা প্রভাবশালী নেতা ছিলেন না রীতেশ।

দেহ উদ্ধারের পর হুগলির দাদপুর থানার পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই তৃণমূল নেতাকে অন্যত্র খুন করে দেহ তালচিনানে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতদেহের গলায় তিনটি ফাঁসের দাগ ছিল। শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্নও ছিল।

মহুয়াদেবী ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানিয়েছেন, ৭ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বেরানোর সময় তাঁর স্বামী বলেছিলেন, কোলাঘাটে তাঁর পরিচিত শৌভিক চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। রীতেশের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের দাবি, শৌভিককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরোতে পারে। কারণ, মহুয়াদেবী জানান, স্বামীর খোঁজে তিনি শৌভিক চক্রবর্তীকে বার বার ফোন করলেও তাঁর ফোনও সুইচ অফ ছিল। তাঁর দাবি, ৯ ফেব্রুয়ারি থানায় অভিযোগ করার পর ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ শৌভিক চক্রবর্তীর খোঁজ করতে পারত। তাঁর দাবি, ‘‘স্বামীকে খুন করা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, দয়া করে তিনি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। তদন্ত করে আমার স্বামীর খুনিরা যেন সাজা পায়। আমার ছেলে অনাথ হয়ে গেল। তার যেন কিছু সুরাহা হয়। না হলে আমাদের সংসার ভেসে যাবে। কারণ, স্বামীই একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন।’’

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্যের পরিবহণ ও পরিবেশ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সোমবার রীতেশের দেহ বাড়িতে পৌঁছনোর পর মরদেহে মালা দেন। তিনি বলেন, “রীতেশ যাঁর কাছে যাবে বলেছিল তাকে পুলিশ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করুক।’’ এ দিন সমবায় সমিতি থেকে রীতেশের মৃতদেহ নিয়ে তৃণমূলের একটি শোকমিছিল তাঁর চাদঁবেড়িয়ার বাড়িতে যায়।

বড় মাপের বা প্রভাবশালী নেতা না হলেও তাঁর এমন পরিণতি হল কেন ?

শুভেন্দুবাবু বলেন, “নন্দীগ্রাম কাণ্ডের সময় সিপিএম একটা কথা বারবার বলতো। বেশি কথা বলো না, তা হলে নন্দীগ্রাম করে দেব। অর্থাৎ নন্দীগ্রাম জুজু দেখিয়ে, ভয় দেখাত সিপিএম। কাঁথি-৩ ব্লকের বহু সিপিএম কর্মী এখন বিজেপি করছে। তারা হয়তো কিছুদিন পরে প্রচার করবে বা তৃণমূল কর্মীদের ভয় দেখাবে, ‘বেশি কথা বলো না, তা হলে রীতেশ করে দেব’। সামনে লোকসভা ভোট। বিজেপির জনসমর্থন তেমন নেই। তৃণমূলের নানা কর্মসূচিতে লোক উপচে পড়ছে। তাই জনতাকে ভয় দেখাতেই এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে।’’

প্রসঙ্গত, সোমবারই চাঁদবেড়িয়ায় রীতেশের বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যাক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই ব্যক্তির মৃতদেহ কাঁথি বাইপাসের পাশে একটি দোকানের পিছনে পড়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। দোকানের মালিক সকাল সাতটা নাগাদ দোকান খুলতে এসে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কাঁতি থানায় খবর দেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রীতেশের ঘটনার সঙ্গে এই মৃতদেহ পাওয়ার কোনও যোগ নেই।

বিজেপির জেলা সভাপতি তপন মাইতির দাবি, ‘‘বিজেপি এমন রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তৃণমূলের নেতারা চারিদিকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। তার ফলে তাঁদের খুন হতে হচ্ছে। এর সঙ্গে বিজেপির যোগ নেই।’’

Murder TMC Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy