প্রসূতি মৃত্যু এবং চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ— এ বার দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তার জেরে শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং নার্সের শাস্তির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন মৃতের পরিবারের লোকজন। তবে সেই বিক্ষোভ ভয়ঙ্কর চেহারা নেওয়ার আগেই এলাকা ঘিরে ফেলে দিঘা উপকূল ও দিঘা থানার পুলিশ বাহিনী। মৃতার স্বামী দিঘা উপকূল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ ওঠে। যদিও, হাসপাতাল সুপার বিষ্ণুপদ বাগ দাবি করেছেন তাঁর কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত জবা গিরি (২০) রামনগর থানার হলদিয়া পাটনা গ্রামের বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শুক্রবার সকাল ১১ টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে প্রসব করান স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নলিনীকুমার বর্মন। সদ্যোজাত পুত্র সন্তান সুস্থ থাকলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন জবা। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
পরিবারের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের পর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকী জবা যখন অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তখন তাঁকে দেখেননি কর্তব্যরত কোনও নার্স বা চিকিৎসক। শনিবার সকাল থেকেই হাসপাতালের জরুরি ও বহির্বিভাগের সামনে সুবিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন পরিজনেরা। মৃতার স্বামী পুরুষোত্তম গিরি বলেন, “গত সপ্তাহে একবার যন্ত্রণা হওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু সে দিন চিকিৎসকরা বললেন, কিছু হয়নি। তখনই যদি একটু ভাল করে দেখা হত, তা হলেই বোঝা যেত কিছু জটিলতা রয়েছে।’’
তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘যে ভাবে চিকিৎসা করার কথা, সবই হয়েছিল। তবে পরিবারের তরফে অভিযোগ পেলে নিয়ম মাফিক তদন্ত করা হবে।’’
বিক্ষোভের খবর পেয়েই এ দিন হাসপাতালে আসেন রামনগর-১ বিডিও অনুপম বাগ। তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত করে এসেছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টা বোঝা যাবে। প্রয়োজনে তদন্ত হবে।’’
এ দিন বিক্ষোভ শুরু হওয়ার খবর পৌঁছতেই হাসপাতালে এসে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে হাসপাতালে বিক্ষোভের ঘটনার কথা মাথায় রেখেই তড়িঘড়ি পুলিশ বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেয়েছি। উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’