পরীক্ষাকেন্দ্রে মেহতাব কুরেশি। নিজস্ব চিত্র।
জন্ম থেকে দু’পা অকেজো। বেঁকে গিয়েছে হাতও। দু’পায়ে ভর দিয়ে কোনওদিন দাঁড়াতে পারেনি বছর সতেরোর কিশোর মেহতাব কুরেশি। যদিও জীবনের লড়াইয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সে। বুধবার খড়্গপুর শহরের অন্ধ্র হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় মেহতাব।
খড়্গপুর শহরের সাঁজোয়ালের বাসিন্দা মেহতাব সাউথসাইড হাইস্কুলের ছাত্র। মেহতাবের বাবা ইরশাদ কুরেশির সাইকেল মেরামতির দোকান রয়েছে। মা তকদিরুন বিবি গৃহবধূ। ছোট থেকেই প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছে মেহতাব। তার বাবা ইরশাদ কুরেশি বলেন, “আমাদের ইচ্ছা, ছেলে প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক। কষ্ট হলেও ওর পড়াশুনো কোনও বাধা আসতে দিইনি।” মেহতাবের মা তকদিরুন বিবিও বলেন, “আমরা কোনওদিন ছেলেকে বুঝতে দিইনি যে ও অন্যদের থেকে আলাদা। ছেলে মাধ্যমিক দিচ্ছে ভেবে গর্ব হচ্ছে।” মামা মহম্মদ ফজলের মোটরবাইকে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে যায় মেহতাব। মামা মহম্মদ ফজল বলেন, “পড়াশোনার জন্য মেহতাবের এই লড়াই দৃষ্টান্ত হওয়া উচিত। তবে এতদিনেও সরকার থেকে ও একটি তিনচাকার সাইকেলও পেল না। এটা আক্ষেপের।” প্রথমদিন পরীক্ষা দিয়ে খুশি মেহতাব। তার কথায়, “বাবা-মা আমার থেকেও বেশি কষ্ট করছে। আমি হাঁটতে পারিনা। কিন্তু পড়াশোনা করতে ভাল লাগে। তাই শিক্ষক হয়ে বাবা-মার মুখে হাসি ফোটাতে চাই।” মেহতাবের জন্য গর্বিত তার স্কুল। খড়্গপুরের সাউথ সাইড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাপদ বসু বলেন, “অসুবিধা থাকা সত্ত্বে্ও অন্য পড়ুয়াদের মতো একই সময়ে মেহতাব পরীক্ষা দিয়েছে এটাই বড় কথা। এ ভাবে ওর এগিয়ে যাওয়া গর্বের বিষয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy